লখনউ: যোগীরাজ্যে ফের দলিত নিগ্রহের অভিযোগ। গম তোলার কাজে লাগতে অস্বীকার করায় উত্তরপ্রদেশের বদাউনে একটি দলিতকে মারধর করে প্রস্রাব খেতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ। কয়েকদিন আগের এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উচ্চ বর্ণভূক্তদের বিরুদ্ধে। নিগৃহীত প্রথমে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের পর্যন্ত করতে পারেননি। প্রায় এক সপ্তাহ পর তিনি গত রবিবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। ৫০ বছরের ওই নিগৃহীতর অভিযোগ, উচ্চবর্ণের চার ব্যক্তি তাঁকে তাঁদের জমির গম তোলার কাজে লাগতে বলেছিল। কিন্তু তাঁর নিজের খেত থেকে গম তুলতে হত। সেজন্য তিনি উচ্চবর্ণের লোকেদের কথায় রাজি হননি। আর এভাবে মুখের ওপর না বলায় তাঁকে গাছে বেঁধে উচ্চবর্ণের চারজন মারধর করেন বলে অভিযোগ। অভিযুক্তরা তাঁর গোঁফ উপড়ে দেন এবং মূত্র পান করতেও বাধ্য করেন বলে অভিযোগ।
পুলিশের কাছে গেলেও প্রথমে ওই দলিত ব্যক্তিকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। প্রায় একসপ্তাহ পরে হজরতপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।
ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই অস্বস্তিতে পড়ে প্রশাসন। বদাউনের সিনিয়র পুলিশ সুপার হজরতপুরের ইন্সপেক্টরকে কর্তব্যে গাফিলতির দায়ে সাসপেন্ড করেছেন এবং বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বদাউনের পুলিশ সুপার (শহর) জীতেন্দ্র সিংহ বলেছেন, হজরতপুর থানা এলাকার আজমপুর বিসাউরিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে গত ২৩ এপ্রিল। চার অভিযুক্তর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। নিগৃহীত প্রান্তিক কৃষক বলেও জানিয়েছন সিংহ। সোমবার তাঁর বাড়িতে গিয়ে পুলিশের পদস্থ আধিকারিকরা যথোপযুক্ত তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন।
অভিযুক্তরা ফেরার। তাঁদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছেন এসএসপি।
রাজ্যের তপশিলি জাতি ও উপজাতি কমিশনও এই ঘটনায় জেলা পুলিশের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছে।
সামনেই আগামীবছরের লোকসভা ভোট। তার আগে সারা দেশেই দলিত নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে চাপের মুখে পড়েছে বিজেপি। উত্তরপ্রদেশের গোরখপুর ও ফুলপুর লোকসভা আসনের উপনির্বাচনে পরাজয়ে অশনিসংকেত দেখছে বিজেপি। এই অবস্থায় ক্ষত মেরামতের জন্য দলিতদের বাড়িতে রাতও কাটাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। কিন্তু এরপরও এ ধরনের বদাউনের মতো ঘটনায় সরকার অস্বস্তি আরও বাড়ছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।