মুম্বই: ১৯৯৩ সালে মুম্বই ধারাবাহিক বিস্ফোরণ মামলায় আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন আবু সালেমকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছে টাডা আদালত।
২০০২ সালে পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে আবু সালেম ও তার সেই সময়ের বান্ধবী মনিকা বেদীকে ধরে ইন্টারপোল। অভিযোগ, ভুয়ো নথি দিয়ে তারা সেই দেশে প্রবেশ করেছে। আবু ও মনিকা চার বছর জেলে কাটান। এর মধ্যে ২ বছর পর্তুগালের জেলে ছিলেন দুজনে।
২০০৫ সালের নভেম্বরে ভারতের হাতে প্রত্যর্পণ করা হয় আবু সালেমকে। তার দাবি, ২০০০ সালে লস অ্যাঞ্জেলসের একটি মসজিদে সে মনিকাকে বিয়ে করে। যদিও, মনিকা সেই দাবি খারিজ করেন।
আবু সালেমের তথাকথিত বান্ধবী মনিকা সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য—
১. ১৯৭৫ সালে পঞ্জাবের হোসিয়ারপুর জেলার ছাবেওয়াল শহরে জন্ম হয় মনিকার। কিছু সময়ের মধ্যেই মনিকার গোটা পরিবার নরওয়ে চলে যায়। সেখানে প্রায় ১৬ বছর কাটান তিনি।
২. মনিকা, নাচতে ভালবাসেন। ২০ বছর বয়সে ভারতে এসেছিলেন। তিনি সিদ্ধান্ত নেন, এখানে থেকেই কত্থক শিখবেন। সেখানেই প্রবীণ অভিনেতা মনোজ কুমারের সঙ্গে তার সাক্ষাত হয়। তিনি, তাঁর ছেলে কুণালের বিপরীতে মনিকাকে অভিনয় করার প্রস্তাব দেন। ছবিটি না চললেও, মনিকার কেরিয়ারের দৌড় শুরু হয়ে যায়।
৩. মনিকা শ্রীদেবীর বিশালমাপের ভক্ত। একটি সাক্ষাতকারে তিনি বলেছিলেন, শ্রীদেবী ও জীতেন্দ্র অভিনীত ছবির ভিসিডি এনে দেওয়ার শর্তে তিনি তাঁর ভাইয়ের ঘর সাফ করে দিতেন।
৪. আরেকটি সাক্ষাতকারে, মনিকা জানান, ১৯৯৮ সালে ফোনে আবু সালেমের সঙ্গে তাঁর প্রথম কথোপকথন হয়। সেখানে তাঁকে দুবাইতে একটি শোয়ে পারফর্ম করার প্রস্তাব দিয়েছিল সালেম। তিনি রাজি হওয়ায়, সালেমের পরের পর ফোন আসতে শুরু করে। একটা সময়ে, দুজনের বন্ধুত্ব হয়ে যায়। সবই চলত ফোনে। মনিকার দাবি, সালেম নিজের নাম অন্য বলেছিল।
মনিকা যোগ করেন, এমনকী, আবু সালেম নামের সঙ্গেও তিনি অবগত ছিলেন না। মনিকা বলেছিলেন, সেই সময় তিনি দাউদ ইব্রাহিম ও ছোটা শাকিলের নাম শুনেছিলেন। কিন্তু, আবু সালেমের নাম শোনেননি। ফলত, সালেম সত্যি নাম বললেও, তিনি বুঝতে পারতেন না।
৫. সালেমের চাপে বলিউড প্রযোজকরা মনিকাকে জানম সমঝা করো, জোড়ি নম্বর ওয়ান সহ একাধিক ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ দেন।
৬. আবু ও মনিকা দুজনই সম্পর্ককে গুরুত্ব দিত। আবুর সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করতে চেয়েছিলেন মনিকা। দুজনই আমেরিকা যান। মনিকা জানান, তিনি ভেবেছিলেন, নতুন করে জীবন শুরু করবেন। বলেন, সালেম ওখানে বৈধভাবে বিভিন্ন শো আয়োজন করতে চেয়েছিল। অভিনেত্রীর দাবি, সেটাই ছিল সালেমের স্বপ্ন। সেই জন্য সে বেশ খাটত। কিন্তু, ওর অতীত পিছু ছাড়েনি।
৭. আবু ও মনিকা গ্রেফতার হওয়ার পরই তাদের সম্পর্কের কথা জানতে পারেন মনিকার বাড়ির সদস্যরা। নরওয়ে থাকায় এখানকার বিষয়বস্তুর সঙ্গে তাঁরা অবগত ছিলেন না। ফলে, এই খবর তাঁদের কাছে ছিল বড় আঘাত। মনিকা জানান, তিনি বাবা-মায়ের কাছে মিথ্যে কথা বলেছিলেন।
৮. আবুর সঙ্গে বিয়ের কথা অস্বীকার করে মনিকা জানিয়ে দেন, তাঁরা স্রেফ দীর্ঘদিন ধরে লিভ-ইন করতেন। এর জন্য তাঁকে আইনি নোটিস পাঠায় সালেম। সেখানে সে জানায়, তাঁর এই মন্তব্যে সে আঘাত পেয়েছে। তবে একইসঙ্গে বলে, মনিকা চাইলে সে তাঁকে স্বেচ্ছায় ডিভোর্স দিতে রাজি।
৯. বিগ বস-এর দ্বিতীয় সিজনে প্রতিযোগী ছিলেন মনিকা। তিন সপ্তাহ ধরে তিনি বিগ বস-এর বাড়িতে ছিলেন তিনি। তার পর ছাঁটাই হন।
১০. যখন খবর প্রচারিত হয় যে আবু সালেম মুম্বইবাসী এক মহিলাকে বিয়ে করেছেন, তখন তাঁকে শুভেচ্ছা জানান তিনি। মনিকা বলেছিলেন, আমি ওর জন্য খুশি। আমি আজও সম্পর্কটাকে শ্রদ্ধা করি। তবে, ও (সালেম) জীবনে এগিয়ে গিয়েছে। আমিও।