গোরখপুর: উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মঞ্চে খুনের মামলায় অভিযুক্ত নির্দল বিধায়ক অমনমণি ত্রিপাঠীর উপস্থিতি ঘিরে বিরোধীদের তোপের মুখে বিজেপি। গত শুক্রবার গোরখপুরে বিজেপি একটি সভায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একমঞ্চে দেখা গিয়েছে তাঁকে।সভায় ৩৫ বছরের বিধায়ক যোগীর পা ছুঁয়ে প্রণামও করেন। শুধু তাই নয়, পরের দিন মুখ্যমন্ত্রীর জনতা দরবার-এও স্ত্রী খুনে অভিযুক্ত অমনমণিকে দেখা গিয়েছিল। জল্পনা ছড়িয়েছে, বিতর্কিত এই বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। অমনমণিও এই জল্পনা খারিজ করে দেননি। গোরখনাথ মঠের বাইরে সাংবাদিকদের নওটানওয়ার বিধায়ক বলেছেন, মহারাজজি আমার অভিভাবক। তাঁর আদেশই আমার কাছে শেষ কথা।

বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে অমনমণি বলেছেন, মহারাজজি আমাকে যা বলবেন, তাই করব।

অমনমণির বাবা  অমরমণি ত্রিপাঠী মুলায়ম সিংহ যাদবের নেতৃত্বাধীন সমাজবাদী পার্টি সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। চাঞ্চল্যকর মধুমন্তী শুক্লা হত্যা মামলায় তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে।

স্ত্রীর খুনে নাম জড়িয়ে পড়ায় এবারের বিধানসভা নির্বাচনে অমনমণিকে টিকিট দেয়নি সমাজবাদী পার্টি। ২০১৬-র নভেম্বরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে মামলায় চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। মার্চে জামিন পেয়েছেন অমনমণি।

এ হেন নেতার সঙ্গে যোগীর মাখামাখি বিরোধীদের হাতে নয়া হাতিয়ার তুলে দিয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, আদিত্যনাথের কথায় ও কাজে কোনও মিল নেই। ভোটের প্রচারে আইন-শৃঙ্খলাকে অন্যতম ইস্যু করেছিল বিজেপি। ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী অপরাধীদের রাজ্য ছেড়ে যেতে বলেছিলেন। যোগী বলেছেন, অপরাধীদের অপরাধের ফল ভুগতে হবে। কিন্তু বাস্তবে সেই কথার প্রতিফলন নেই। খুনের মামলায় অভিযুক্তের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর দহরম মহরম সেই কথাই প্রমাণ করে।

সমাজবাদী পার্টি নেতা রাজেন্দ্র চৌধুরী বলেছেন, রাজ্য আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনও উন্নতিই হয়নি। জনপ্রতিনিধিরাই আইনভঙ্গকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।

উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস বিজেপির বিরুদ্ধে দুমুখো কৌশল নিয়ে চলার অভিযোগ এনেছে। দলের নেতা অশোক সিংহ বলেছেন, দুমুখো নীতিই বিজেপির ইউএসপি। প্রয়োজনমতো তারা ভোল পাল্টে ফেলে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একইমঞ্চে খুনের মামলায় অভিযুক্তের থাকাটা খুবই লজ্জাজনক ঘটনা।

বিজেপি অবশ্য সাফাই গেয়ে বলেছে, একজন জনপ্রতিনিধি মুখ্যমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে বা প্রণাম করতেই পারেন। এতে দোষের কিছু নেই।