গোরক্ষপুর (উত্তরপ্রদেশ): গোরক্ষপুরের সরকারি হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডারের ঘাটতির জেরে শিশুমৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে শোরগোলের মধ্যে রাহুল গাঁধী আজ সেখানে আসছেন শুনে তীব্র কটাক্ষ করলেন যোগী আদিত্যনাথ।
মুখ্যমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন, কংগ্রেস সহ সভাপতিকে সম্ভবত বিআরডি হাসপাতালে মৃত শিশুদের পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হবে না।


আদিত্যনাথের মন্তব্য, গোরক্ষপুরকে পিকনিক স্পট হতে দেওয়া যাবে না! এদিন তিনি গোরক্ষপুরে স্বচ্ছতা অভিযানের সূচনা করেন। ৭১টি শিশুর দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে এনসেফালাইটিস ছড়িয়ে পড়া রুখতে এই উদ্যোগ। প্রসঙ্গত, অক্সিজেনের ঘাটতির জন্য শিশুমৃত্যু হয়েছে, মানতে নারাজ রাজ্য প্রশাসন। তাদের দাবি, এনসেফালাইটিসেই মারা গিয়েছে ওরা।

আদিত্যনাথ রাহুলের পাশাপাশি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ সিংহ যাদবকেও নিশানা করে বলেন, আমার মনে হয়, শেহজাদা লখনউয়ে আর যুবরাজ দিল্লিতে বসে এই স্বচ্ছতা অভিযানের গুরুত্ব বুঝতে পারবে না। ওরা এখানে আসবে পিকনিক করতে, সেটা হতে দিতে পারি না আমরা।

মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, গোরক্ষপুর ও পূর্ব উত্তরপ্রদেশের মানুষের আত্মমর্যাদাকে কেউ প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করলে, তারা নিজেরাই এগিয়ে আসবেন, নিজেদের সচেতনতার মাধ্যমে এ ধরনের প্রাণঘাতী রোগের বিরুদ্ধে লড়বেন।

তাঁর এই কর্মসূচির মাধ্যমে এনসেফালাইটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে, আশা প্রকাশ করে তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্যের আগের সরকারগুলি নিজেদের সংকীর্ণ স্বার্থে রাজ্যবাসীকে মৌলিক সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে।

পাল্টা রাহুল মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছেন, শিশুমৃত্যুর প্রকৃত কারণ আড়াল করার চেষ্টা করবেন না। কংগ্রেস সহ সভাপতি এদিন মৃত শিশুদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। পরে সাংবাদিকদের বলেন, যাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি, সকলেই আমায় অক্সিজেনের অভাবেই তাঁদের বাচ্চা মারা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন। অনেক পরিবারকে অ্যাম্বু ব্যাগ দেওয়া হয়েছিল, সেটা তাঁরা ঘন্টার পর ঘন্টা পাম্প করে গিয়েছেন। ঘটনাটা যে সরকারের তৈরি ট্র্যাজেডি, সেটা স্পষ্ট।



অক্সিজেনের ঘাটতি, অভাবেই মর্মান্তিক শিশুমৃত্যু হয়েছে, সেটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যেন এটা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা না করেন, তিনি অপরাধীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিন।

রাহুল জানান, তিনি এর আগেও বিআরডি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ঘুরে গিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে মিডিয়া মারফত জানিয়েছিলেন, ওখানে অনেক কিছুই নেই, অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি।

ওই হাসপাতালে সাম্প্রতিক কালে এনসেফালাইটিসেই এতগুলি বাচ্চা মারা গিয়েছে বলে দাবি আদিত্যনাথ প্রশাসনের। রাহুল বলেন, মোদীজী নতুন ভারতের কথা বলেন। কিন্তু এমন ভারত আমরা চাই না। আমরা চাই এমন হাসপাতাল যেখানে গরিব মানুষ বাচ্চাদের চিকিত্সার জন্য নিয়ে আসবে, হাসিমুখে ফিরে যাবে।