নয়াদিল্লি: বিশ্বের এলিট মিসাইল টেকনোলজি কন্ট্রোল রেজিম (এমটিসিআর) গোষ্ঠীর সদস্যপদ প্রায় হাতের মুঠোয় চলে আসার পর এবার পাঁচ বছর ধরে স্থগিত থাকা ‘প্রহার’ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করতে চলেছে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা (ডিআরডিও)।


জানা গিয়েছে, ১৭০-কিলোমিটার পাল্লার ভূমি থেকে ভূমি এই ট্যাক্টিক্যাল ক্ষেপণাস্ত্রকে রফতানি জন্য খুলে দিয়েছে ভারত। ২০১৪ সালে সোলে প্রতিরক্ষা প্রদর্শনীতে এই ক্ষেপণাস্ত্রের এক্সপোর্ট ভেরিয়েন্ট ‘প্রগতি’-কে রেখেছিল ভারত। সেখানে বেশ কিছু বন্ধু রাষ্ট্র ক্ষেপণাস্ত্রের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন এমটিসিআর-এ অন্তর্ভুক্ত হলে ভারত এই মিসাইলকে সহজেই অন্য দেশে রফতানি করতে পারবে। তার আগে একটা সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ ক্ষেপণাস্ত্রটির চাহিদা বাড়াবে বলেই মনে করা হচ্ছে। এর আগে ২০১১ সালের জুলাইতে এই ক্ষেপণাস্ত্রের শেষবার পরীক্ষা করা হয়েছিল।

প্রতিরক্ষামন্ত্রক সূত্রে খবর, আগামী সপ্তাহেই প্রহার-এর পরীক্ষা করা হবে। জানা গিয়েছে, দুদিন দুটি পরীক্ষা হবে। প্রথম পরীক্ষা হবে ১৪ তারিখ। দ্বিতীয়টি হবে ১৬ তারিখ। তার আগে ওড়িশা উপকূলের কাছে চাঁদিপুর-অন-সি পরীক্ষাকেন্দ্রে এই মুহূর্তে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি তুঙ্গে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘অ্যাটাক্যাম্স’ এবং পাকিস্তানের ‘নাসর’ মিসাইলের উত্তর বলা যেতে পারে ভারতের প্রহার-কে। এই ক্ষেপণাস্ত্রে রয়েছে অত্যাধুনিক ইনারশিয়াল নেভিগেশন সিস্টেম এবং ইলেক্ট্রো-মেকানিকাল অ্যাকচুয়েশন সিস্টেম, যা অন্যান্য দেশের হাতে থাকা এই শ্রেণীর বাকি ক্ষেপণাস্ত্রগুলির চেয়ে প্রহারকে অনেকটাই এগিয়ে রেখেছে।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর কথা মাথায় রেখেই এই ক্ষেপণাস্ত্রকে তৈরি করা হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্রটি যে কোনও পরিবেশে, যে কোনও আবহাওয়ায় ব্যবহার করা যাবে বলে দাবি ডিআরডিও-র। মূলত, রণক্ষেত্রে সাপোর্ট সিস্টেম হিসেবে কাজ করবে এই ক্ষেপণাস্ত্র। ক্ষেপণাস্ত্রটির মোট ওজন প্রায় ১৪০০ কেজি। এটি ২০০ কেজির ওয়ারহেড (বিস্ফোরক) বহনে সক্ষম।

জানা গিয়েছে, অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যে একে এক জায়গা থেকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা সম্ভব। ক্যানিস্টার-লঞ্চারে একসঙ্গে ৬টি মিসাইল ভরে নিক্ষেপ করা যায়। ওই মিসাইলগুলিতে পৃথক প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে পৃথক ওয়ারহেড লাগানো যায়। মিসাইগুলিকে যে কোনও দিকেই নিক্ষেপ করা সম্ভব। সবচেয়ে বড় কথা, এই ক্ষেপণাস্ত্রের নির্মাণ খরচও অত্যন্ত কম।