নয়াদিল্লি: ৩০ বছর ভারতীয় নৌসেনার ভরসা ছিল সে। এখন বুড়ো হয়েছে, ঘুণ ধরেছে হাড়ে। অবশেষে অবসরে যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিরাট। সোমবার বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিরাটকে ডিকমিশন করার ঘোষণা করল ভারতীয় নৌসেনা।
সব থেকে দীর্ঘ সময় কোনও নৌবাহিনীতে কাজ করা যুদ্ধজাহাজ হিসেবে গিনেয়স বহুকে নাম লিখিয়েছে আইএনএস বিরাট। প্রায় ১৫ বছর ধরে এই যুদ্ধজাহাজ একাই সামলেছে ভারতীয় জলসীমা। পূর্ব ও পশ্চিম সমুদ্রতটের পাশাপাশি আরব সাগর থেকে বঙ্গোপসাগর- একার হিম্মতে দুশমনকে রুখে এসেছে সে। ৩০ বছর ধরে নিরন্তর দায়িত্ব পালনের পর আজকে থেকে আর কাজে লাগানো হবে না আইএনএস বিরাটকে।
ভারতীয় সৌসেনার দ্বিতীয় এয়ারক্র্যাফট কেরিয়ার বা বিমানবাহক যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিরাট আগে ছিল ব্রিটেনের রয়্যাল নেভিতে। তখন নাম ছিল এইচএমএস হার্মিস। ১৯৫৯ থেকে ব্রিটিশ নৌসেনার কাজ করার পর আশির দশকের শেষে ৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে তাকে কিনে নেয় ভারতীয় নৌসেনা। সে পাকাপাকিভাবে কাজ শুরু করে ৮৭-র ১২ মে থেকে।
আজ তার অবসরগ্রহণের সময় উপস্থিত থাকবেন নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল সুনীল লানবা। এই জাহাজেই ১৯৯৮ সালে এক্সিকিউটিভ অফিসার ছিলেন তিনি। থাকবেন এই জাহাজে চাকরি করা আরও কয়েকজন ভারতীয় ও ব্রিটিশ নৌ অফিসার।
ভারতীয় নৌসেনায় আইএনএস বিরাটের গৌরবময় অধ্যায়ের আজই শেষ দিন। এদিন সন্ধেয় শেষবারের মত নামানো হবে তার নাভাল এনসাইন ও কমিশনিং পেনডেন্ট।
এই মুহূর্তে নৌবাহিনীর হাতে রয়েছে একটিই এয়ারক্র্যাফট কেরিয়ার আইএনএস বিক্রমাদিত্য। বিক্রান্ত নামে অন্য এয়ারক্র্যাফট কেরিয়ারটি আপাতত তৈরি হচ্ছে কোচিন শিপইয়ার্ড লিমিটেডে।
২৮,৭০০ টন মালবহনে সক্ষম আইএনএস বিরাট ২২৬.৫ মিটার লম্বা, ৪৮.৭৮ মিটার চওড়া। এটি নিয়ন্ত্রণ করতেন দেড়শ অফিসার ও দেড়হাজার নাবিক।
অ্যাডমিরাল জেনারেল জানিয়েছেন, আগামী ৪ মাসের মধ্যে এই জাহাজের কোনও ক্রেতা না জুটলে আইএনএস বিক্রান্তের মত এটিকেও টুকরো টুকরো করে লোহালক্কড়ের বাজারে বিক্রি করা হবে। ভারতীয় নৌসেনা থেকে ১৯৯৮-এ অবসর নেওয়া আইএনএস বিক্রান্তকে ২০১৫ সালে লোহালক্কড়ের ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। তার আগে পর্যন্ত দীর্ঘ ১৭ বছর মুম্বই ডকইয়ার্ডে পড়েছিল সে। তার রক্ষণাবেক্ষণে নৌসেনার প্রতি বছর ১০০ কোটি টাকা খরচ হত।