লখনউ: কথা হল বাবা, ছেলের। সংঘাতের প্রেক্ষাপটে গতকাল রাতে অখিলেশ সিংহ যাদবই ভোটের পর মুখ্যমন্ত্রী হবেন, এ নিয়ে কোনও বিভ্রান্তির অবকাশই নেই বলে জানিয়ে সুর নরম করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মুলায়ম সিংহ যাদব। তারপরই আজ সকালে বাবার বাংলোয় যান অখিলেশ। সেখানে ৯০ মিনিট একান্তে কথা হয় দুজনের।


কাকা শিবপাল সিংহ যাদব ও অমর সিংহ, যে দুজনকে বহিরাগত বলে দাবি করে কাঠগড়ায়  তুলেছেন অখিলেশ, সে সময় সেখানে ছিলেন না। ফলে মুখোমুখি আলোচনার মাধ্যমে মুলায়ম, অখিলেশের মধ্যে বরফ গলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু সমাজবাদী পার্টি (সপা)-র ভিতরের সূত্রের দাবি, মতবিরোধ রয়েই গিয়েছে দুজনের মধ্যে। কোনও রফাসূত্র বেরয়নি। বৈঠক শেষে অখিলেশ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব না দিয়েই চলে যান।


কে দলের সভাপতি, সেটাই পিতা, পুত্রের মধ্যে বিরোধের মূল প্রশ্ন বলে শোনা যাচ্ছে। অখিলেশ গত ১ ডিসেম্বর মুলায়মের সভাপতি পদ খারিজ করে দেন। মুলায়ম তা মানতে নারাজ। তিনিই এখনও সপা সভাপতি বলে ঘোষণা করেছেন মুলায়ম। তিনি চান, অখিলেশ সভাপতি পদের দাবি ছেড়ে দিন। পাল্টা অখিলেশও নরম হতে নারাজ। দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা, বিধায়ক তাঁর পাশেই আছেন বলে দাবি ৪৩ বছর বয়সি মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি এ ব্যাপারে অনড় হয়ে রয়েছেন যে, তিন মাস সপা সভাপতি পদে থাকবেন, ভোট হয়ে গেলেই সরে দাঁড়াবেন। তাঁর শিবিরের নেতারা জানিয়েছেন, অখিলেশ চান, শিবপাল, অমর সিংহ যেন কোনওমতেই এই সময়কালে দলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় না থাকেন। উপরন্তু তিনি শিবপালকে সপা-র উত্তরপ্রদেশ শাখার প্রধান পদ থেকে সরানো ও অমরকে বরখাস্তের দাবি  তুলেছেন। কিন্তু তাঁর দুটি দাবির একটিও মুলায়ম না মানায় ভোটমুখী রাজ্যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে শাসক দলে।


এদিকে এর মধ্যেই নির্বাচন কমিশন আজ জানিয়ে দিয়েছে, দলের দখল ও দলীয় প্রতীক সাইকেল মুলায়ম না অখিলেশ, কার হাতে যাবে, সে ব্যাপারে শুনানি হবে ১৩ জানুয়ারি। ওইদিন দু পক্ষেরই বক্তব্য শুনবে  কমিশন। উত্তরপ্রদেশে প্রথম দফার ভোটপর্বের মনোনয়ন প্রক্রিয়া ১৭ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে। তার আগেই বিষয়টির নিষ্পত্তি  করে ফেলতে চায় কমিশন। অখিলেশ শিবির সপা বিধায়ক, বিধান পরিষদ সদস্যদের সই করা হলফনামা পেশ করে ‘সাইকেল’ প্রতীকের ওপর অধিকার দাবি করেছে। পাল্টা মুলায়ম শিবিরের দাবি, দলীয় সংবিধান অনুসারে তিনিই এখনও দলের সভাপতি। তাছাড়া, অখিলেশদের পেশ করা হলফনামা জাল। কমিশনের বিষয়টি বিচার করার আগেই সেই হলফনামার সত্যাসত্য যাচাই করে নেওয়া উচিত।