শ্রীনগর: অমরনাথ যাত্রীদের ওপর জঙ্গি হামলার পর আজ সকালে নয়াদিল্লিতে নিজের বাসভবনে জরুরিকালীন ভিত্তিতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি বৈঠক ডাকেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। আজ সকাল ৯টা বেজে ৪৫ মিনিটে সেই বৈঠক শুরু হয়। মূলত, জম্মু-কাশ্মীরে অমরনাথ যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখতেই এই জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ জানান, অমরনাথ যাত্রীদের নিরাপত্তা আরও কয়েক ধাপ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।  এছাড়া এভাবে আক্রমণের ঘটনার কড়া নিন্দা করে নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে পুণ্যার্থীদের ওপর এধরনের হামলায় যেভাবে পুরো কাশ্মীরবাসী প্রতিবাদ জানিয়েছেন, তাতে তিনি তাঁদের সেলাম জানাতেও ভোলেননি।




এদিকে কাশ্মীরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজ সেখানে গিয়ে পৌঁছেছেন সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত। উপত্যকার পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁকে সমস্ত তথ্য দিয়েছেন উচ্চপদস্থ সেনা আধিকারিকরা।



এছাড়া ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ (এস.পি.বেদ) এবং সিআরপিএফ-এর ডিজির সঙ্গে বৈঠক করারও কথা রয়েছে সেনাপ্রধানের।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে অমরনাথ যাত্রার দুটো রাস্তাতেই নিরাপত্তা আরও জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজকের বৈঠকে রাজনাথের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল সহ মন্ত্রকের অন্যান্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। এছাড়াও ছিলেন কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী এবং গোয়েন্দাসংস্থার প্রধান। জানা গিয়েছে বৈঠকে, কীভাবে ভবিষ্যতে এধরনে সন্ত্রাস হামলা হলে তা প্রতিরোধ করা যায়, সেবিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বৈঠকের পরই সেখানে বিস্তারিত কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, সেপ্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে জানানো হয়েছে।



এদিকে অমরনাথ যাওয়ার রাস্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সেখানে হাজির হয়েছেন সিআরপিএফ-এর ডিরেক্টর জেনারেল আর.আর ভটনগর।

সোমবার অনন্তনাগে অমরনাথ যাত্রীদের ওপর জঙ্গি হামলায় ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত ১৯।  সূত্রের খবর, ২০০০ সালের পর গতকালের হামলাটিই হচ্ছে অমরনাথ যাত্রীদের ওপর ঘটে যাওয়া সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা। গতকালের জঙ্গি হামলার ঘটনায় যাঁরা মারা গিয়েছেন তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন গুজরাতের বাসিন্দা, দুজন মহারাষ্ট্রের।

প্রসঙ্গত, গতকাল প্রথমে জঙ্গিরা পুলিশের একটি বুলেটপ্রুফ বাঙ্কারে হামলা চালায়। সেসময় পুলিশও পাল্টা আক্রমণ চালায়। তারপর খানাবলে পুলিশের একটি পিকেট লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। এরপর পুলিশ পাল্টা গুলি চালানো শুরু করলে, জঙ্গিরা এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। সেসময় বাস ভর্তি অমরনাথ যাত্রীরা আক্রান্ত হয়।

ঘটনার কড়া ভাষায় নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্যের রাজ্যপাল এন.এন ভোহরা এবং মুখ্যমন্ত্রী মেহেবুবা মুফতির সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি। অমরনাথ যাত্রীদের সবধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়ার বিষয় আশ্বস্ত করেছেন। রাজনাথ সিংহও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গিয়েছে।