ইসলামাবাদ: বিক্ষোভ-প্রতিবাদের মধ্যেই সার্ক সম্মেলনে অংশ নিতে পাকিস্তান পৌঁছলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।

বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে বসছে সার্ক-গোষ্ঠীভুক্ত রাষ্ট্রগুলির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক।

সেখানে যাবতীয় নিরাপত্তা-সংক্রান্ত প্রসঙ্গ উঠে আসার কথা। সেই তালিকায় যেমন থাকবে সীমান্তপার সন্ত্রাসবাদ, তেমনই স্থান পাবে মুম্বই বিস্ফোরণের অন্যতম কাণ্ডারী দাউদ ইব্রাহিমের প্রত্যর্পণ প্রসঙ্গ।

তার আগে এদিন শীর্ষস্তরের প্রতিনিধিদলকে সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তানে পৌঁছন রাজনাথ। প্রতিনিধিদলে রয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পদস্থ কর্তাব্যক্তিরা।

রওনা দেওয়ার আগে রাজনাথ জানান, সন্ত্রাসবাদ ও সংগঠিত অপরাধের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক স্থিতাবস্থা বজায় রাখার ওপর তিনি নজর দেবেন।

তিনি বলেন, এই বৈঠকে আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে সুনিশ্চিত করার জন্য যা যা প্রয়োজন, সব প্রসঙ্গই উঠবে।

কেন্দ্রীয় সূত্রের খবর, বৈঠকে ভারতে নাশকতামূলক কার্যকলাপ বন্ধ করার জন্য পাকিস্তানের ওপর চাপসৃষ্টি করবেন রাজনাথ।

একইসঙ্গে, লস্কর-ই-তৈবা এবং জয়েশ-ই-মহম্মদের মতো জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যও ইসলামাবাদকে জানাবেন তিনি।

নাশকতা ও সন্ত্রাসবাদ ছাড়াও ভিসা-প্রসঙ্গ এবং মাদক ও অস্ত্র-পাচার রোধ নিয়েও আলোচনা হবে প্রতিনিধিদের মধ্যে।

প্রসঙ্গত, আগামীকালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের আগে এদিন স্বরাষ্ট্রসচিবদের বৈঠক হয়। সেখানে ভারতের তরফে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব মেহঋষি।

তবে, সার্ক বৈঠকে যোগ দিলেও, ভারত ও পাকিস্তানের দুই মন্ত্রীর মধ্যে পৃথক বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরে হিজবুল জঙ্গিনেতা বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর বর্তমানে দুদেশের মধ্যে সম্পর্কে অনেকটাই তিক্ত আকার ধারন করেছে।

বুরহানের প্রশংসা করাই শুধু নয়, পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এমনও বলেন যে, একদিন কাশ্মীর পাকিস্তানের হবে।

যারপরই পাকিস্তানের তীব্র সমালোচনা করেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। তিনি পাল্টা জানিয়ে দেন, শরিফের এই আশা অনন্তকালেও পূরণ হবে না।

ফলে, এই পরিস্থিতিতে পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলি খানের সঙ্গে রাজনাথের পার্শ্ববৈঠক হলে সেটা ব্যতিক্রমী হবে।

এদিকে, রাজনাথের পাক-সফর ঘিরে পাকিস্তান-জুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদের ডাক দিয়েছে লস্কর প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সঈদ।

তার হুঁশিয়ারি, রাজনাথ পাকিস্তানে এলে দেশজুড়ে প্রতিবাদ হবে। যদিও, এসবকে পাত্তা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত।

গতকালই নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের চাকোঠীতে ধর্নায় বসেছিল হাফিজের ছেলে তালহা সঈদ।

এদিন বিভিন্ন জেহাদি ও ধর্মীয় সংগঠনের তরফে পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ হয়। সামিল হয় প্রায় ২ হাজার কর্মী-সদস্যরা।

সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, প্রতিবাদে অংশ নিতে দেখা যায় জঙ্গিগোষ্ঠী হিজবুল মুজাহিদিনের শীর্ষ নেতা তথা ইউনাইটেড জেহাদ কাউন্সিল (ইউজেসি)-এর প্রধান সঈদ সালাউদ্দিনকে, যে দলের তরুণ নেতা ছিল বুরহান।

প্রতিবাদে দেখা যায় কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ইয়াসিন মালিকের স্ত্রী মিশাল মালিককেও।