পুলিশের দাবি, হায়দরাবাদের বাঞ্জাকুট্টার বাসিন্দা টি রাজকুমার মাস ছয়েক আগে রাজারহাটের খামার শিবতলায় বাড়ি তৈরি করে থাকতে শুরু করে।
কীভাবে এই চক্রে জড়িয়ে পড়ল রাজকুমার? পুলিশ সূত্রে খবর, বছর পাঁচেক আগে টাকার জন্য একজনকে নিজের কিডনি বিক্রি করেছিল টি রাজকুমার। তারপরই ধীরে ধারে কিডনি পাচারচক্র গড়ে তোলে সে। দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, তামিলনাড়ুর এক চিকিৎসকের সাহায্য নিয়ে প্রথমে চেন্নাইয়ের কিডনি পাচারের কারবার শুরু করে টি রাজকুমার। পরে দিল্লিতে।
পুলিশ জানিয়েছে, দিল্লি থেকে কিডনি পাচারচক্রের জাল ছড়িয়ে দেয় উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে। পুলিশ সূত্রকে উদ্ধত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের দাবি, দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কারবার পরিচালনা করত টি রাজকুমার।
এক এক করে জলন্ধর, কয়েম্বত্তুর এবং হায়দরাবাদে ছড়ায় ব্যবসা। পরে দিল্লি গিয়ে সেখানেও ছড়ান কিডনি পাচারের জাল। জানা গিয়েছে, শুধু ভারতই নয়, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ইন্দোনেশিয়াতেও একইভাবে চক্রের জাল বিছিয়েছিলেন বছর চল্লিশের রাও।
তদন্তে নেমে দিন পনেরো আগে কিডনি পাচারের অভিযোগে দিল্লি ও সংলগ্ন বিভিন্ন জায়গা থেকে টি রাজকুমারের ডান হাত অসীম পাত্র-সহ ৮জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতার এই ৮ জনের মধ্যে কয়েকজন উত্তর ২৪ পরগনা ও হুগলির বাসিন্দা। রয়েছেন মমতা নামে শিলিগুড়ির এক মহিলাও। ছিলেন এক দম্পতিও। জেরায় ওই দম্পতি স্বীকার করে কিশোর ছেলের পায়ে অস্ত্রোপচারের জন্য বিপুল অর্থের প্রয়োজন ছিল। তাই তাঁরা নিজেদের কিডনি বেচে দিয়েছেন। এরজন্য তারা ৪ লক্ষ এবং ৩ লক্ষ টাকা পেয়েছেন।
দিল্লি পুলিশের দাবি, তাঁদের জেরা করেই এই কিডনি পাচার চক্রের মূল পাণ্ডা টি রাজকুমারের অবস্থান জানা যায়। সূত্রের খবর, সেই মতো চারদিন আগেই দিল্লি পুলিশের কয়েকজন অফিসার কলকাতায় চলে আসেন। শেষমেশ, মোবাইলের সূত্র ধরে রাজারহাটের খামার শিবতলা থেকে আন্তঃরাজ্য কিডনি পাচার চক্রের মূল পাণ্ডা টি রাজকুমারকে গ্রেফতার করেন তাঁরা।