নয়াদিল্লি: কাশ্মীরে যারা জঙ্গিদের আড়াল করতে পাথর ছুঁড়ছে, তাদেরও জঙ্গিদের সহযোগী হিসেবেই গণ্য করবে সেনা। প্রয়োজনে তাদের ওপরেও গুলি চালানো হবে। দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এ কথা জানিয়ে দিলেন সেনা প্রধান বিপিন রাওয়াত।

মঙ্গলবার উপত্যকায় জঙ্গিবিরোধী অপারেশনে মেজর সতীশ দাহিয়া সহ ৪ সেনা কর্মীর মৃত্যু হয়। সেনা প্রধান তো বটেই, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও আসেন তাঁদের শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। পরে সেনা প্রধান রাওয়াত বান্দিপোরা ও হান্দওয়াড়ায় সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে ওয়াকিবহাল করেন।

পরে সেনা প্রধান বলেন, যারা জঙ্গি বিরোধী অপারেশনের সময় সেনার কাজে সমর্থনের বদলে বাধা তৈরি করে, তাদেরও জঙ্গিদের সহযোগী হিসেবেই গণ্য করা হবে। যারা আইএসআইএস ও পাকিস্তানি পতাকা নাড়ায়, তাদের দেশ বিরোধী হিসেবে ধরবে সেনা। সন্ত্রাসদমনে কেউ বা কারা বাধা সৃষ্টি করলে তাদের ওপরেও গুলি চালাতে সেনা দ্বিধা করবে না।

জঙ্গি পান্ডা বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর উপত্যকায় দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে টানা অশান্তি হয়। সেনা ও নিরাপত্তা রক্ষীদের ওপর দিনের পর দিন পাথর ছুঁড়ে বিক্ষোভ দেখায় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। নোট বাতিলের পর আচমকা ছেদ পড়ে ওই বিক্ষোভে। কিন্তু কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে, যখনই নিরাপত্তারক্ষীরা জঙ্গি বিরোধী অপারেশনে নামছেন, তখনই কোথা থেকে একদল লোক মাটি ফুঁড়ে উঠে এসে পাথর ছুঁড়ে তাঁদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। সাম্প্রতিককালেও দেখা গেছে একই ঘটনা। ফলে অনেক সময় নিরাপত্তারক্ষীদের নজর এড়িয়ে পালাতে সক্ষম হয়েছে জঙ্গিরা। উল্টোদিকে নিরাপত্তারক্ষীরা প্রাণ হারিয়েছেন। এমনকী মঙ্গলবার সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষের সময়েও বিক্ষোভকারীদের পাথর ছুঁড়ে বাধাদানের ফলেই এক মেজর সহ চার চারজন সেনাকর্মীর মৃত্যু ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

সেনা জানাচ্ছে, এর পিছনে সীমান্তের ওপার থেকে সুনির্দিষ্ট নীতি নেওয়া হয়েছে বলে তাদের ধারণা। তা হল, জঙ্গি বিরোধী অপারেশনের সময় পাথর ছোঁড়া যুবকদের দিয়ে নিরাপত্তারক্ষীদের মনোযোগ ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হবে, যাতে জঙ্গিরা তার সুযোগ নিতে পারে। ফলে সেনাও তাদের অপারেশনের পদ্ধতি পর্যালোচনা করছে। বিপজ্জনক ও ততটা বিপজ্জনক নয়, এমন অস্ত্র ব্যবহার করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করা যেমন রয়েছে, তেমনই ভাবা হচ্ছে, ওই জনতার পান্ডাদের টার্গেট করার কথা।