জম্মু: সীমান্তের ওপার থেকে পাকিস্তানির সেনার হামলায় নিহত সেনাবাহিনীর মেজর ও তিন জওয়ান। জম্মু ও কাশ্মীরের রাজৌরির কেরি সেক্টরে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর শনিবার দুপুরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর টহলদার দলের ওপর গুলিবৃষ্টি করে পাক সেনা। ভারতীয় জওয়ানরাও পাল্টা গুলি চালান।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর জনৈক অফিসার জানান, ১২০ ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেডের আওতাধীন ২ শিখ ব্যাটালিয়নের টহলদার দলটি এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে টহল দিচ্ছিল। তখনই হামলা শুরু হয়।
ঘটনাচক্রে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি রাজৌরি জেলা প্রশাসনের সদরে রয়েছেন স্থানীয় মানুষের অভাব অভিযোগের কথা শুনতে। তখনই ব্রাত গালা এলাকায় এই আক্রমণ। প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র জানান, এক অফিসার নিহত হন। মেজর মোহারকার প্রফুল্ল অম্বাদাস, ল্যান্স নায়েক গুরমেইল সিংহ ও সিপাই পারগত সিংহ মারাত্মক জখম হন। তিনজনই মারা গিয়েছেন। জখম হয়েছেন আরও দুজন। প্রতিরক্ষা সূত্রে অবশ্য চারজনের নিহত হওয়ার দাবি করা হচ্ছে।
চলতি বছরেই ৭৭৮ কিমি দীর্ঘ নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর এপর্যন্ত পাক সেনার ৭৮০টির বেশি যুদ্ধবিরতি ভাঙার ঘটনা নথিভুক্ত করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। অন্যদিকে বিএসএফের টহল দেওয়া ১৯৮ কিমি আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি ভাঙার সংখ্যা ১২০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। ২০১৪-য় নিয়ন্ত্রণ রেখায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন হয়েছিল ১৫৩টি, ২০১৫-য় ১৫২টি। গত বছর সংখ্যাটা ছিল ২২৮।
গত মাসেই ভারতের ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনস (ডিজিএমও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ কে ভট্ট হটলাইনে পাকিস্তানের ডিজিএমও মেজর জেনারেল সাহির সামসাদকে বলেন, রাওয়ালপিন্ডির পাক সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরের সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ রেখায় মোতায়েন তাদের বাহিনীর মধ্যে যোগাযোগ নেই বলে মনে হচ্ছে। একদিকে ওদের সদর দপ্তর শান্তি চায় বলে জানাচ্ছে, কিন্তু নিয়ন্ত্রণ রেখায় ওদের জওয়ানরা বিনা প্ররোচনায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ভারতে ব্যাপক গোলাগুলি চালাচ্ছে।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল ভট্ট পাকিস্তানকে জানিয়ে দেন, ভারতীয় সেনাবাহিনী সীমান্তে শান্তি, স্থিতাবস্থা রক্ষায় চেষ্টা চালিয়ে যাবে, তবে পাকিস্তানের দিক থেকে যে কোনও আগ্রাসী, প্ররোচনামূলক আচরণের কড়া জবাব দেওয়া, পাল্টা আঘাত করার পূর্ণ অধিকার তার আছে।
আজকের হামলা প্রসঙ্গে রাজ্যের উপ মুখ্যমন্ত্রী নির্মল সিংহ বলেন, পাকিস্তান এমন কাপুরুষোচিত হামলার যোগ্য জবাব পাচ্ছে। তা সত্ত্বেও সংযত করছে না নিজেকে। পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র। সেদিন খুব দূরে নয়, যখন গোটা বিশ্ব ওদের সন্ত্রাসবাদী তকমা দেবে। ওরা শুধু সন্ত্রাসবাদ সমর্থনই করে না, তার পৃষ্ঠপোষকতাও করে।