মুম্বই: গত মাসে মুম্বইয়ের যে এলফিনস্টোন রোড স্টেশনে ফুট ওভারব্রিজে প্রবল ভিড়ের চাপে পদপিষ্ট হয়েছিলেন বহু মানুষ, মৃত্যু হয়েছিল ২৩ জনের, এবার সেখানে একটি নতুন ফুট ওভারব্রিজ তৈরি করতে সাহায্য করবে সেনাবাহিনী। আজ ওই স্টেশন পরিদর্শন করেন রেলমন্ত্রী পীযুষ গয়াল, প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফঢ়নবীশ। ফঢ়নবীশ বলেন, মুম্বইয়ের এলফিনস্টোন রোড স্টেশন ও শহরতলির আরও দুটি স্টেশনে ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণে সেনার সাহায্য নিচ্ছি আমরা। ৩১ জানুয়ারির মধ্য সব ব্রিজ তৈরির কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আমায় জানানো হয়েছে। সীতারামন বলেন, সম্ভবত এই প্রথম সাধারণত যেটা অসামরিক কাজ বলে ধরা হয়, তাতে সেনাবাহিনীকে ডাকা হচ্ছে, কিন্তু এলফিনস্টোনের ট্র্যাজেডিটা বিরাট বড়। সেনাকে সীমান্তে দায়িত্ব পালন করতে হয়। তা সত্ত্বেও বিষয়টির গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা মাথায় রেখে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। সেনাবাহিনী এখানে এসে পর্যবেক্ষণ করে গিয়েছে, কোথায় ব্রিজ হবে, জায়গাও দেখেছে। এই নির্মাণ কাজের প্রতিটি পর্যায়ে তারা থাকবে। তবে সেনাবাহিনীকে ফুট ওভারব্রিজ তৈরিতে লাগানোর সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। সেনাবাহিনীকে অসামরিক কাজে না লাগাতে প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহ। তাঁর বক্তব্য, সেনাকে যুদ্ধের জন্য ট্রেনিং দেওয়া হয়, জনসাধারণের কাজে ব্যবহারের জন্য নয়। জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাও সেনাকে পায়ে হাঁটার ওভারব্রিজের নির্মাণে ব্যবহারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে কটাক্ষ করেছেন, সর্বোচ্চ জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হলেই একেবারে শেষ উপায় হিসাবে ডাকা হয় সেনাবাহিনীকে। ব্যাপারস্যাপার দেখে তো মনে হচ্ছে, সেনাবাহিনীই বোধ হয় স্পিড ডায়ালের প্রথম নম্বর! এবার কি সেনাবাহিনীকে রাস্তার গর্ত বোজাতেও ডাকা হবে? প্রশ্ন করেছেন কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় নিরূপম। কেন রেলমন্ত্রকের গাফিলতির বোঝা কাঁধে নিতে হবে সেনাকে, প্রশ্ন তুলে ট্যুইট করেছেন কংগ্রেস মুখপাত্র প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী। কেন অসামরিক কাজে ডাকা হবে সেনাকে, জানতে চেয়েছেন তিনি। আরও অনেকে ট্যুইট করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ২৯ সেপ্টেম্বরের মর্মান্তিক পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার পর রেলের অফিসাররা ওই স্টেশনের ব্যস্ত প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের সামাল দেওয়ার কাজে পুলিশ মোতায়েন করেন। শহরতলি স্টেশনগুলি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় হকারদের, শহরতলির রেল নেটওয়ার্কের পরিকাঠামো সংক্রান্ত কাজেও গতি আনা হয়। এ মাসের গোড়ায় গয়াল রেলযাত্রীদের সুরক্ষায় একগুচ্ছ পদক্ষেপ ঘোষণা করেন, ফুট ওভারব্রিজের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। দেশের সব স্টেশনে পায়ে হাঁটা ওভারব্রিজ থাকা 'বাধ্যতামূলক' করা হয়।