নয়াদিল্লি: র‍্যানসমওয়্যার ভাইরাসের হামলায় কার্যত বিপর্যস্ত বিশ্বের প্রায় দেড়শোটি দেশ। সাইবার দুনিয়ার নয়া ত্রাস এই ভাইরাস। সূত্রের খবর, এই ভাইরাস নিয়ে সন্ত্রস্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকও। এরপরই আরবিআইয়ের তরফে সমস্ত ব্যাঙ্কগুলোর উদ্দেশ্যে নির্দেশ জারি করা হয়েছে, এটিএমগুলোর সফটওয়্যার আপডেট না করে জনসাধারণের ব্যবহারের জন্যে দেওয়া যাবে না। যতক্ষণ সেই আপডেট হচ্ছে না, তার আগে সমস্ত এটিএম বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়েছে।


আরবিআই তাদের নির্দেশে বলেছে, স্পেশাল উইনডোজে আপডেট করতে হবে এটিএমগুলোতে। এরমধ্যেই সমস্ত ব্যাঙ্কে সেই নির্দেশনামা পাঠিয়েও দেওয়া হচ্ছে। তবে ব্যাঙ্কের তরফে দাবি করা হয়েছে, আপাতত গ্রাহকদের তথ্য ফাঁস বা টাকা জালিয়াতির সম্ভাবনা নেই এই ভাইরাস হামলার মাধ্যমে।

র‍্যানসমওয়্যারের মূল কাজই হল, কম্পিউটারের ভেতর ঢুকে পুরো সিস্টেমকে বিপর্যস্ত করে দেওয়া। তারপর সেখানে বার্তা দেওয়া হচ্ছে সিস্টেম আপনার, তথ্য আপনার, কিন্তু কোনও তথ্য ব্যবহার করতে পারবেন না। তথ্য ব্যবহার করতে হলে মুক্তিপণ বাবদ বিটকয়েনে ৩০০ ডলার দিতে হবে। যেহেতু এটিএমে কোনও তথ্য থাকে না, তাই সেক্ষেত্রে কোনও তথ্য আটকাতে পারবে না এই ভাইরাস। এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাস টাকার লেনদেন আটকে দিতে পারে, এমন কোনও খবর  নেই। তবে তারপরও যদি কোনও মেশিন প্রভাবিত হয়, তাহলে তত্ক্ষনাত, সেই এটিএম মেশিন রিফরম্যাট করতে হবে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবারই র‍্যানসমওয়্যার সংক্রান্ত খবর সংবাদ শিরোনামে এসেছে। সেদিন জানা গিয়েছিল ব্রিটেনের স্বাস্থ্য পরিষেবা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত এই ভাইরাস হামলায়। তারপর আস্তে আস্তে জানা যায় প্রায় দেড়শোটির দেশের জরুরি পরিষেবা প্রভাবিত। মূলত, যে কম্পিউটারে উইনডোজ এক্সপি-র পুরনো ভার্সান রয়েছে, সেখানেই অপারেশন চালাচ্ছে হ্যাকাররা।

এটিএম মেশিন নিয়ে আরবিআই কর্তৃপক্ষ চিন্তিত কারণ, দেশের প্রায় ৬০ শতাংশ মেশিনে মূলত উইনডোজ এক্সপির পুরনো ভার্সান রয়েছে।

সূত্রের খবর, বৈদ্যুতিন এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে ইন্ডিয়ান কম্পিউচার ইমারজেন্সি রেসপন্স টিম বা আইসিইআরটিকে শনিবারই নির্দেশ দেওয়া হয় এই ভাইরাস থেকে বাঁচার উপায় বের করতে। তারপরই ওই সংস্থার তরফে ভারতের সমস্ত কম্পিউটারকে উইনডোজের লেটেস্ট প্যাচ লেভেলে আপগ্রেড করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে আরবিআই, ন্যাশনাল পেমেন্ট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া এবং ইউআইডিএআই-কে (আধার) নির্দেশ দেয় নিজেদের সিস্টেমকে ভাইরাস থেকে বাঁচাতে নিরাপদ রাখতে। কারণ, এখানে জনসাধারণের একাধিক ব্যক্তিগত তথ্য রাখা রয়েছে। দেশের ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম বা ইকো সিস্টেমকে নিরাপদ রাখতেই এই বাড়তি তত্পরতা কেন্দ্রের।