নয়াদিল্লি: স্বঘোষিত গডম্যান আসারাম বাপুর ধর্ষণ মামলায় আগামীকাল রায় দেবে যোধপুরের বিশেষ তফসিলি জাতি ও উপজাতি আদালত। প্রবীণ আসারামের প্রচুর সমর্থক আছে তিন রাজ্য রাজস্থান, গুজরাত ও হরিয়ানায়। রায় ধর্মগুরুর বিপক্ষে গেলে সেই ভক্তকূল বিক্ষোভ দেখাতে রাস্তায় নেমে তাণ্ডব করতে পারে, এই আশঙ্কায় ওই তিন রাজ্যের সরকারকে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে, বাড়তি বাহিনী মোতায়েন করতে বলল কেন্দ্র।
দোষী ঘোষিত হলে তাঁর ১০ বছর জেল হতে পারে। রায় বেরনোর পর হিংসা মাথাচাড়া দেওয়ার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা মজবুত করতে তিন রাজ্যের প্রশাসনকে বার্তা পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, উত্তেজনাপ্রবণ এলাকাগুলিতে অতিরিক্ত বাহিনী নামাতে বলেছে। গত বছর ডেরা সাচ্চা সৌদা প্রধান গুরমিত রাম রহিমকে ধর্ষণ মামলায় বিশেষ আদালত দোষী সাব্যস্ত করার পর হরিয়ানা, পঞ্জাব, চন্ডীগড়ে নির্বিচারে হিংসায় মেতে ওঠে তার অনুগামীরা। গুলি চলে, অগ্নিসংযোগ, সংঘর্ষে প্রাণহানি, প্রচুর সরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি, কিছুই বাদ যায়নি। তার পুনরাবৃত্তি রুখতেই এবার তিনটি রাজ্যকে সতর্কবার্তা দিল কেন্দ্র।
আসারামের বিরুদ্ধে উত্তরপ্রদেশের সাজাহানপুরের এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়ারায় গডম্যানের আশ্রমে থেকে পড়াশোনা করত মেয়েটি। ২০১৩-র ১৫ আগস্টের রাতে যোধপুরের কাছে মানাই এলাকায় নিজের আশ্রমে তাকে ডেকে পাঠিয়ে আসারাম ধর্ষণ করেন বলে মেয়েটির অভিযোগ।
এদিকে নিম্ন আদালতের রায়দানের প্রাক্কালে যোধপুরে নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করা হয়েছে। রাজস্থান হাইকোর্টের নির্দেশে যোধপুর সেন্ট্রাল জেলেই রায় ঘোষণা করবে নিম্ন আদালত। ডিআইজি কারা বিক্রম সিংহ বলেন, রায়দানের দিনের জন্য সব ব্যবস্থা তৈরি। জেল ভবনে থাকবেন ম্যাজিস্ট্রেট, আদালতের কর্মীরা, আসারাম, সহ অভিযুক্ত, সরকার ও অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরা। জেল চত্বর সিল করে দেওয়া হবে।
ডিসিপি (পূর্ব) অমন দীপ সিংহ বলেন, ২১ এপ্রিল থেকে শহরে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। থাকবে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। পাশাপাশি শহরে আসারামের আশ্রমগুলির ওপরও নজর রাখা হচ্ছে। সব হোটেল, অতিথিশালা, বাস ও রেল স্টেশনে তল্লাসি চলছে।
আসারামকে ২০১৩-র ১ সেপ্টেম্বর ইন্দোর থেকে গ্রেফতার করে যোধপুরে নিয়ে আসা হয়। তিনি ২ সেপ্টেম্বর থেকে বিচারবিভাগীয় হেপাজতে রয়েছেন।
আসারাম ও চারজনের বিরুদ্ধে ২০১৩-র ৬ নভেম্বর চার্জশিট দেওয়া হয় পকসো আইন, জুভেনাইল আইন ও ভারতীয় দণ্ডবিধির নানা ধারায়। জেলা ও দায়রা আদালতে বিচার শুরু হয় ২০১৭-র ১৯ মার্চ।
১২ বার জামিনের আবেদন করেন আসারাম। ৬ বার খারিজ করে নিম্ন আদালত। ৩ বার করে বাতিল করে যথাক্রমে রাজস্থান হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট।
পাশাপাশি সাহারানপুর জেলা প্রশাসন নিগৃহীতার বাড়িকেও নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, মেয়েটির পরিবারের নিরাপত্তার দিকে সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ওদের বাড়ির পাহারায় নিযুক্ত রয়েছে ৫ পুলিশকর্মী। আরও ২ জনকে রাখা হবে। সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে বাড়িতে কারা আসছে, যাচ্ছে, সেদিকেও খেয়াল রাখা হচ্ছে। রুদ্রপুরে আসারামের আশ্রমেও পাহারা বসেছে।
কাল আসারাম বাপুর ধর্ষণ মামলার রায়, হিংসা এড়াতে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে রাজস্থান, গুজরাত ও হরিয়ানাকে নির্দেশ কেন্দ্রের, সুরক্ষা বাড়ল নিগৃহীতার বাড়িরও
Web Desk, ABP Ananda
Updated at:
24 Apr 2018 04:08 PM (IST)
দেশ (nation) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -