পটনা: ভাগলপুরে হিংসার ঘটনায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী কুমার চৌবের ছেলে অরিজিত শাশ্বতের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এফআইআরকে বাজে কাগজের টুকরো বলে ছেলের পাশেই দাঁড়িয়েছেন অশ্বিনী। বিহারের জেডি (ইউ)-বিজেপি জোট সরকারের পুলিশ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ছেলের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করলেও তাঁকে এখনও গ্রেফতার করেনি। শাশ্বত নিজে দাবি করেছেন, রাজনৈতিক চাপের মুখে পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দায়ের করেছে। ওই হিংসার ঘটনার সঙ্গে যুক্ত অপর গোষ্ঠীর দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা কেন নেওয়া হয়নি, সেই প্রশ্নও তুলেছেন শাশ্বত। উল্লেখ্য, গত ১৭ মার্চের হিংসার ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মী সহ বেশ কয়েকজন জখম হন। এই ঘটনায় দুটি এফআইর দায়ের হয়। সেখানে শাশ্বত সহ নয় জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। ভাগলপুরের একটি আদালত গত শনিবার শাশ্বত সহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
শাশ্বত দাবি করেছেন, নাথনগরের এসএইচও এবং ডেপুটি পুলিশ সুপার ভাগলপুরের বিধায়কের অঙ্গুলি হেলনে চলায় ওই হিংসার ঘটনা ঘটে। উল্লেখ্য,ভাগলপুর আসনের বিধায়ক কংগ্রেসের অজিত শর্মা। শাশ্বতকে হারিয়েই তিনি জয়ী হয়েছিলেন।। ২০১৫-র নির্বাচনে বাবার শক্ত ঘাঁটিতে হেরে গিয়েছিলেন তিনি। এবার নাম না করেই হিংসার ঘটনায় তিনি অজিত শর্মাকে নিশানা করেছেন। নাথনগরের হিংসার ঘটনা নিয়ে শর্মা গত সপ্তাহে রাজ্য বিধানসভায় মুলতুবী প্রস্তাব এনেছিলেন।
গত ১৭ মার্চ শাশ্বত একটি মিছিল বের করেছিলেন। পুলিশের নির্দেশ উপেক্ষা করে বের করা ওই মিছিল চলাকালে হিংসার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ।
তিনি যে আত্মসমর্পণ করবেন না, তা জানিয়ে দিয়েছেন শাশ্বত। তিনি বলেছেন, আমি ফেরার নই। আমি আমার বাড়িতেই আছি। দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে সাজানো মামলার বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি।
এদিকে, ছেলের পাশেই দাঁড়িয়েছেন মোদী সরকারের মন্ত্রী অশ্বিনী চৌবে। তাঁর দাবি, শাশ্বত নির্দোষ। তিনি আরজেডি ও কংগ্রেসের বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ এনেছেন। চৌবে এফআইআরকে বাজে কাগজের টুকরো বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁর অভিযোগ, দুর্নীতিগ্রস্ত আধিকারিকরা তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা সাজিয়েছে।
অন্যদিকে, এই ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে নিশানা করেছেন আরজেডি দলের নেতা তথা বিহার বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তেজস্বী প্রসাদ। তাঁর অভিযোগ, নীতীশ বিজেপির ভয়ে ভয়ে সরকার চালাচ্ছেন। তিনি বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের কয়েকশ মিটার দূরে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেন, এমন একজনকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারছে না। তার ওপর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চৌবে পুলিশ সম্পর্কে অমর্যাদাপূর্ণ কথাবার্তা বলছেন। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নীতীশের মর্যাদা যে কতটা কমেছে, এই ঘটনা তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।