লখনউ: উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁতে মহিলাকে গণধর্ষণের পর নৃশংস খুনের অভিযোগে মূল অভিযুক্ত মন্দিরের পুরোহিতকে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গ্রেফতার করল পুলিশ।

এফআইআর দায়ের হওয়ার পর থেকেই গা ঢাকা দেয় পুরোহিত মহন্ত সত্যনারায়ণ। তাকে ধরতে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে পুলিশ।


জানা যায়, এক ভক্তের বাড়িতে লুকিয়ে রয়েছে মূল অভিযুক্ত। সন্দেহ হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারাই তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।


জেলাশাসক কুমার প্রশান্ত জানান, প্রায় মধ্যরাতে তাঁর কাছে খবর আসে যে, উঘাইটি থানার অন্তর্গত একটি গ্রামে এক ভক্তের বাড়িতে আত্মগোপন করে আছে মূল অভিযুক্ত।


গত ৩ তারিখ এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে গণধর্ষণের পর খুন করার অভিযোগে তোলপাড় যোগীরাজ্য। শুধু তাই নয়, মৃত্যু নিশ্চিত করতে গোপনাঙ্গে লোহার রড ঢুকিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা।


শুরু থেকেই পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে সরব ছিল মৃতার পরিবার। মন্দিরের পুরোহিত ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তোলে পরিবার।


১৮ ঘণ্টা পর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। ৬ তারিখ ঘটনায় ধর্ষণ ও খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ। এসটিএফ দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করলেও, মূল অপরাধী পলাতক ছিল।


বদায়ুঁর এসএসপি জানান, আগে যে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছে। ওই ২ জনের দাবি, তারা মহিলাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। কেবলমাত্র সাহায্য করতে এসেছিল।


এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সেন্টার ফর সোশ্যাল রিসার্চের অধিকর্তা রঞ্জনা কুমারী কর্তৃপক্ষকে এই ঘটনার দায়িত্ব নিতে বলেন।


ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক রং লেগেছে এই ঘটনায়। বিজেপি ও কংগ্রেসের মধ্যে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। প্রবল চাপের মুখে উঘাইটি থানার ইন-চার্জকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।


মহিলাদের বিরুদ্ধে নৃশংস ঘটনার সাক্ষী একাধিকবার থেকেছে যোগী-রাজ্য। গত ১৪ সেপ্টেম্বর উত্তরপ্রদেশের হাথরসে ১৯ বছরের দলিত তরুণী গণধর্ষণের শিকার হন। ১৫ দিনের লড়াই শেষ হয় গত ২৯ সেপ্টেম্বর। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন দিল্লির হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।


৪ অভিযুক্তই উচ্চবর্ণের। ঘটনার ৩ মাস পর চার্জশিট গঠন করা হয়।  তফশিলি জাতি-জনজাতি আইনেও ওই চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।


বছর ১৯-এর দলিত তরুণীর মৃত্যুতে তোলপাড় হয় সারা দেশ। আরেক নির্ভয়ার মৃত্যুতে যোগী সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেয় দেশবাসী।


দলিত তরুণীর মৃত্যুতে বিতর্কে জড়ায় যোগী সরকার। তরুণীর মৃত্যুর পর অভিযোগ ওঠে, পুলিশ মধ্যরাতে পরিবারের অনুমতি না নিয়েই শেষকৃত্য করে দিয়েছে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ।


পুলিশ জানায়, পরিবারের অনুমতি নিয়েই শেষকৃত্য করা হয়েছে। চাপের মুখে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় উত্তরপ্রদেশ সরকার।