নয়াদিল্লিগোয়া ও মণিপুরে বিজেপি সরকার গঠন করায় ক্ষোভ উগরে দিলেন রাহুল গাঁধী। কংগ্রেস সহ-সভাপতির অভিযোগ, টাকার জোরে জনাদেশ ‘চুরি’ করে ‘গণতন্ত্রকে খাটো’ করেছে বিজেপি। যদিও, রাহুলের তোলা সব অভিযোগ খারিজ করে দেন অরুণ জেটলি।


সদ্যসমাপ্ত পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে গোয়া ও মণিপুরে কোনও দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তবে, উভয় ক্ষেত্রেই, বিজেপিকে পিছনে ফেলে একক বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে আসে কংগ্রেস।


৪০ আসনের গোয়ায় বিজেপি যেখানে পায় ১৩টি আসন, কংগ্রেস জেতে ১৭টি। অথচ, আসন সংখ্যায় কংগ্রেসের থেকে কম থাকা সত্ত্বেও, নির্দল ও অন্যান্য দলের সমর্থনে গোয়ায় ইতিমধ্যেই সরকার গঠন করেছে বিজেপি। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিচ্ছেন মনোহর পর্রীকর।


গোয়ার পাশাপাশি মণিপুরেও সরকার গঠনের বিষয়ে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবির। সেখানেও, নির্দল ও স্থানীয় দলের সমর্থনে সরকার গড়ার পথ প্রায় প্রশস্ত করে ফেলেছে বিজেপি।


এই দুই রাজ্যে সরকার গঠনের স্বপ্ন ‘হাতছাড়া’ হওয়ায় বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেন রাহুল। এদিন সংসদ ভবনের বাইরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, দুই রাজ্য যেখানে আমরা জিতেছি, সেখানে অর্থের জোরে মানুষের রায় চুরি করেছে বিজেপি। তিনি যোগ করেন, গোয়া ও মণিপুরে গণতন্ত্রকে খাটো করা হয়েছে।


প্রসঙ্গত, গত ১১ তারিখ নির্বাচনের ফল বেরনোর পর থেকে এই প্রথম মুখ খুললেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি। তিনি বলেন, বিজেপির সঙ্গে আমাদের লড়াই নীতির। মণিপুর ও গোয়ায় বিজেপি যা করল, সেটা তাদের নীতি। আর এর বিরুদ্ধেই আমরা লড়াই চালাচ্ছি।


কিন্তু এই দুই রাজ্যে সরকার গঠনের দাবি নিয়ে কেন গড়িমসি করল কংগ্রেস? এই প্রশ্নের জবাবে রাহুল দাবি করেন, বিজেপি যেভাবে টাকা দিয়ে মানুষের রায়কে ছিনিয়ে নিল, তার পর আর কিছুই করার থাকে না। তাঁর পাল্টা, সরকার গঠনের দাবিতে কে আগে বা পরে করল, তা বড় কথা নয়। আসল প্রশ্ন হল, কত টাকার বিনিময়ে বিজেপি সরকার গঠন করল?


শুধু বিজেপি নয়, এদিন রাহুলের আক্রমণের নিশানায় ছিলেন গোয়ার রাজ্যপালও। কংগ্রেস সহ-সভাপতির অভিযোগ, রাজ্যপাল মৃদুলা সিনহা ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ কাজ করেছেন। তাঁর দাবি, সরকার গঠনের বিষয়ে কংগ্রেস পক্ষের দাবি শোনার আগেই পর্রীকরকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।


আবার উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে বিপুল জয়ের জন্য এদিন বিজেপিকে অভিনন্দন জানালেও একইসঙ্গে রাহুল মনে করিয়ে দেন, এই জয় এসেছে মেরুকরণের জন্য। বলেন, (উত্তরপ্রদেশ) কেন জিতিনি তার অনেক কারণ আছে। অন্যতম কারণ, মেরুকরণ।


কংগ্রেস সাংসদ যোগ করেন, প্রত্যেক দলের চড়াই-উতরাই থাকে। উত্তরপ্রদেশে আমাদের পারফরম্যান্স নিম্নমুখী ছিল। যা হতেই পারে। আমরা তা স্বীকার করছি। তবে (বিজেপির বিরুদ্ধে) নীতির লড়াই ছাড়ব না। তিনি ফের একবার মনে করিয়ে দেন, উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে খারাপ ফল করলেও পঞ্জাব, গোয়া ও মণিপুরে দল ভাল ফল করেছে।


এদিকে, রাহুলের তোলা সব অভিযোগকে খারিজ করে দেন অরুণ জেটলি। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কটাক্ষ, ১৭ জন বিধায়ক নিয়ে সরকার গঠনের আশা করাটা ‘একটু বেশি বাড়াবাড়ি’। গোয়ার রাজ্যপালের ভূমিকার স্বপক্ষে জোর সওয়াল করে জেটলি বলেন, উনি যা করেছেন নিয়ম মেনেই।


তাঁর দাবি, ১৭ জন বিধায়কের কোনও দলকে রাজ্যপাল সরকার গঠনের জন্য ডাকতে পারেন না। মনোহর পর্রীকরের নেতৃত্বাধীন ২১ জনের নামের তালিকা পেশ করা হলে তিনি তারপর নির্দেশ দেন।


কংগ্রেসের তোলা অভিযোগকে এদিন তীব্র আক্রমণ করে জেটলি বলেন, ওরা বড্ড বেশি অভিযোগ তোলে। ওরা সুপ্রিম কোর্টেও গিয়েছিল। সেখানে তারা খালি হাতে ফেরে। তারপর সংসদেও ইস্যুটি উত্থাপন করে। এখন বাইরে বলছে।