আমদাবাদ ও নয়াদিল্লি: গুজরাতের পুর-নির্বাচনে বিজেপির জয়জয়কার। মঙ্গলবার প্রকাশিত হওয়া ফলাফল অনুযায়ী, দুটি পুরসভা এবং একটি মহকুমা পঞ্চায়েত দখল করেছে গেরুয়া শিবির।


গুজরাত রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৪৪ আসনের মধ্যে ৪১ আসন জিতে ভলসাদ জেলার ভাপি পুরসভা পুনর্দখল করেছে বিজেপি। বাকি তিনটি আসন জিতেছে কংগ্রেস।


একইভাবে, সুরাতের কনকপুর-কনসদ পুরসভাতে বিরোধীদের কার্যত নিশ্চিহ্ন করেছে শাসক দল। ২৮ আসনের মধ্যে ২৭টি জিতে পুরসভার দখল নিয়েছে বিজেপি।


অন্যদিকে, সদ্যসমাপ্ত উপ-নির্বাচনে রাজকোটের গোণ্ডল মহকুমা পঞ্চায়েত কংগ্রেসের দখল থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। এখানে ২২টি আসনের মধ্যে ১৮টিই জিতেছে শাসক দল। কংগ্রেসের কপালে মাত্র চারটি আসন জুটেছে।


এছাড়াও, বিভিন্ন পুরসভা, মহকুমা পঞ্চায়েত এবং জেলা পঞ্চায়েত মিলে ৩১টি আসনেও উপ-নির্বাচন হয়। এখানে গণনার কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। শেষ খবর অনুযায়ী, ২৩টি আসনে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি।


নির্বাচনের ফল এই কারণে গুরুত্বপূর্ণ কারণ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের ফলে তাঁর নিজের রাজ্যের মানুষের মনোভাব বোঝার এই প্রথম ধাপ ছিল। আগামী বছরই বিধানসভা নির্বাচনে যাবে গুজরাত। তার আগে, এই ফলাফল শাসক দলকে উদ্দীপ্ত করবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।



নির্বাচনের ফলাফলে দলের জয় নিশ্চিত হতেই প্রতিক্রিয়া জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নোট বাতিলের প্রসঙ্গ টেনে এদিন টুইটারে তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন লোকসভা, বিধানসভা ও পুরসভা নির্বাচন ও উপ-নির্বাচনের ফলাফল সামনে এসেছে। তা উত্তর-পূর্ব হোক, কিম্বা পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও গুজরাত বিজেপি ভাল ফল করেছে।


এর জন্য তিনি দেশবাসীকে ধন্যবাদও জানান। বলেন, আমি মানুষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তিনি যোগ করেন, এই ফলাফলই প্রমাণ করে যে মানুষ দেশের সার্বিক উন্নয়ন চায়। তাঁরা কোনওমতেই দুর্নীতি ও অপশাসন বরদাস্ত করবেন না।


প্রসঙ্গত, সদ্যসমাপ্ত উপ-নির্বাচনে অসম ও মধ্যপ্রদেশে একটি করে লোকসভা আসন দখল করে বিজেপি। মধ্যপ্রদেশ, ও অরুণাচল প্রদেশে বেশ কয়েকটি বিধানসভা আসনও দখল করে তারা। পশ্চিমবঙ্গে আসন না জিতলেও, ভোটব্যাঙ্ক বাড়াতে সক্ষম হয়েছে দল। এছাড়া, মহারাষ্ট্র ও গুজরাতের বিভিন্ন পুরভোটেও জয়ী হয় গেরুয়া-শিবির।


গুজরাতের ফলাফলকে হাতিয়ার করে বিরোধীদের আক্রমণ করতে ছাড়েনি বিজেপি। এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, নির্বাচনের ফল দেখে বিরোধীদের ‘চোখ খোলা’ উচিত। নির্বাচনে বিজেপির জয় প্রমাণ করছে যে কালো টাকার বিরুদ্ধে মোদী সরকারের অবস্থান নিয়ে বিরোধীদের প্রতিবাদ মানুষ ভাল চোখে নেয়নি।


নোট বাতিল নিয়েও যে মানুষ কেন্দ্রকে সমর্থন করছে, তারও প্রমাণ মিলেছে। তিনি বলেন, নির্বাচন ছোট আকারের হতে পারে। কিন্তু, নোট বাতিলের পরপরই এই ফলাফলের গুরুত্ব অপরিসীম। তাঁর দাবি, বিরোধীদের চোখ খুলে দেখা উচিত, হাওয়া কোন দিকে বইছে।