উদুপি (কর্ণাটক): প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হুঁশিয়ারি-নিষেধ তুড়ি মেরে উড়িয়ে গোরু পাচার হচ্ছে, স্রেফ এই সন্দেহে স্বঘোষিত গো-প্রেমীদের আইন হাতে তুলে নেওয়ার বিরাম নেই। এবার তাদের হাতে প্রাণ দিতে হল খোদ বিজেপি কর্মীকেই! প্রবীণ পূজারী নামে ২৯ বছর বয়সি ওই বিজেপি কর্মী ও তাঁর বন্ধু ২২ বছরের অক্ষয় দেবদিগার ওপর কসাইখানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য লুকিয়ে গোরু-বাছুর পাচারের অভিযোগে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করেছে হিন্দু জাগরণ বেদিকে নামে একটি গোষ্ঠীর সদস্যরা। দুজনকে জখম অবস্থায় ব্রহ্মাবারে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে মারা যান প্রবীণ। অক্ষয় বিপদ কাটিয়ে উঠেছেন বলে জানিয়েছেন উদুপির পুলিশ সুপার কে টি বালকৃষ্ণ। এ ঘটনায় প্রথমে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দলের কর্মীদের সন্দেহ করছিল পুলিশ। বালকৃষ্ণ জানিয়েছেন, হামলায় যুক্ত সন্দেহে ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।


তিনি বলেন, তিনটে বাছুর নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল একটি গাড়িতে। হিন্দু জাগরণ বেদিকে সদস্যরা গাড়িটি আটকে দুজনকে মারধর করেন। তাঁরা বাছুরগুলিকে কসাইখানায় পাচার করছেন অভিযোগ তোলা হয়।ব্রহ্মবার থানায় একটি খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। শ্রীকান্ত নামে হিন্দু জাগরণ বেদিকের জনৈক সদস্য এই মামলায় মূল অভিযুক্ত বলে জানান তিনি।

প্রাথমিক ভাবে গোরু-ব্যবসা সংক্রান্ত বিরোধই বিজেপি কর্মীর হত্যার পিছনে মূল কারণ বলে মনে করা হচ্ছে, জানিয়েছেন কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বর। এর পিছনে কোনও ‘সাম্প্রদায়িক কারণ’ নেই বলেই অভিমত তাঁর।

গত বেশ কয়েক বছর ধরে উদুপি ও দক্ষিণ কন্নড়ের মতো উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে গোরক্ষার নামে বাড়াবাড়ির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে পরমেশ্বর বলেন, আমরা সতর্ক রয়েছি। শান্তি-শৃঙ্খলা অবশ্যই রক্ষা করব আমরা। যাঁরা এ ধরনের গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করছে, তাদের এসব না করার আবেদন করছি। কেননা আমাদের সমাজ সহনশীল, তাকে নষ্ট হতে দেওয়া উচিত নয়।