থানে: রাত ১২.২০। মহারাষ্ট্রের নবি মুম্বইয়ের ভাসি-র এমজিএম হাসপাতাল থেকে গাড়িতে ওঠানো হল সংরক্ষিত হৃদপিন্ড। মস্তিষ্কের মৃত্যুর পর এক মহিলার শরীর থেকে ওই হৃদপিন্ড সংরক্ষণ করা হয়। এরপর গাড়ি রওনা দেয় মুলুন্দের একটি বেসরকারি হাসপাতালের উদ্দেশ্য। ততক্ষণে পুলিশ ও ট্রাফিক আধিকারিকরা ভাসি থেকে মুলুন্দ যাওয়ার রাস্তায় গ্রিন করিডোর গড়ে তুলেছেন। মাত্র ১৬ মিনিটে ১৮ কিমি রাস্তা অতিক্রম করে হৃদপিন্ড পৌঁছে গেল ফর্টিস হাসপাতালে। সেখানে এক দুরারোগ্য হৃদরোগে আক্রান্ত ৬২ বছরের এক ব্যক্তির শরীরে প্রতিস্থাপন করা হল ওই হৃদপিন্ড।
হাসপাতালের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ওই ব্যক্তি ডাইলেটেড কার্ডিওমায়োপ্যাথি (ডিসিএম)-এ আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁর শরীরে সুস্থ একটি হৃদযন্ত্রের প্রতিস্থাপন একান্ত আবশ্যক ছিল। প্রায় একমাস হৃদপিন্ডের খোঁজ করা হচ্ছিল। ডিসিএম হল এমন একটি রোগ যার ফলে হৃদপিন্ডের রক্ত সঞ্চালনের ক্ষমতা কমে যায়। কারণ, বাঁদিকে প্রধান সঞ্চালক গহ্বর  বড় হওয়ার কারণে দুর্বল হয়ে যায়।
এই অবস্থায় ৫০ বছরের এক ব্রেন-ডেথ মহিলার হৃদপিন্ড প্রতিস্থাপন করে ওই ব্যক্তির জীবন রক্ষা পেল বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে।
ফর্টিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাড়িতে পড়ে গিয়েছিলেন ওই মহিলা। হাসপাতালে নিয়ে এলে দেখা যায় তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ায় কারণে তাঁর ব্রেন ডেথ হয়েছে। এই অবস্থায় পরিজনরা তাঁর দেহের বিভিন্ন অংশ দান করার সিদ্ধান্ত নেন। গতরাতেই তাঁর দেহ থেকে হৃদপিন্ড ও লিভার নেওয়া হয়। এ ধরনের দান করা হৃদযন্ত্র খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রতিস্থাপন করতে হয়।
এই অবস্থায় সংরক্ষিত হৃদযন্ত্র যাতে দ্রুততার সঙ্গে ফর্টিসে পৌঁছে দেওয়া যায় তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ও ট্রাফিক গ্রিন করিডর তৈরি করে। ১২.২০-তে রওনা দিয়ে থানে-বেলাপুর-আরোলি হয়ে ফর্টিস হাসপাতালে হৃদপিন্ড পৌঁছে যায় ১২.৩৬-এ।
ওই হৃদযন্ত্রের প্রতিস্থাপন সফল হয়েছে বলে চিকিত্সকরা জানিয়েছেন। রোগীকে আইসিইউ-তে রাখা হয়েছে। আগামী ৪৮-৭২ ঘন্টা তাঁকে পর্যবেক্ষনে রাখা হবে।