নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামের আগে সম্মানসূচক 'শ্রী' বা 'মাননীয়' না বলায় সাতদিনের বেতন কেটে নেওয়ার শাস্তি হল বিএসএফ জওয়ানের। নদিয়ার ওই বিএসএফ জওয়ানের ব্যাপারে বাহিনীর সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ কঠোর মনোভাব নিয়েছিল। অভিযোগ, গত ২১ ফেব্রুয়ারি বিএসএফে উপস্থিতির রেকর্ড রাখার রীতিমাফিক যে জিরো প্যারেড হয়, সেখানে সঞ্জীব কুমার নামে ওই জওয়ান অনুষ্ঠানটিকে 'মোদী প্যারেড' বলে মন্তব্য করেন। তিনি মাহাতপুরে বিএসএফের ১৫-তম ব্যাটালিয়নের সঙ্গে যুক্ত। ব্যাটালিয়নের কমান্ডার কমান্ডান্ট অনুপ লাল ভগত দায়সারা ভাবে প্রধানমন্ত্রীর নাম করায় সঞ্জীব কুমারের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে শৃঙ্খলামূলক পদক্ষেপের প্রক্রিয়া শুরু করেন। সঞ্জীব কুমার ১৯৬৮-র বিএসএফ আইনের ৪০ অনুচ্ছেদের আওতায় 'অপরাধী' সাব্যস্ত হন। নির্দেশে বলা হয়, ২১ ফেব্রুয়ারি জিরো প্যারেডের সময় রিপোর্ট পেশের সময় আপনি 'মোদী প্রোগ্রাম' বলেছেন, যাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অশ্রদ্ধা ফুটে উঠেছে। শাস্তি হিসাবে ওই জওয়ানকে সাতদিনের বেতন দিতে বলা হয়। যদিও বাহিনীর বেশ কয়েকজন সিনিয়র কর্তা সঞ্জীব কুমারের প্রতি 'একটু বেশিই কঠোরতা' দেখানো হল বলে মনে করছেন।
যদিও স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ঘটনাটি জানার পর সাতদিনের বেতন কেটে নেওয়ার শাস্তি মকুব করে দিতে বলেছেন বিএসএফ কর্তাদের। বাহিনীর জনৈক মুখপাত্র বলেন, প্রধানমন্ত্রী অসন্তোষ প্রকাশ করে অবিলম্বে সাজা প্রত্যাহার করতে বলেছেন। ফলে আগের নির্দেশ বাতিল করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কমান্ডান্টকে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা না করায় এবারের মতো সাবধান করে দেওয়া হয়েছে। বাহিনীর সিনিয়র লোকজনকে বারবার বলা হয়েছে, কথায়, কাজে আপনাদের যোগ্য নেতার গুণাবলী দৃষ্টান্ত হিসাবে অধীনস্থ জওয়ানদের সামনে তুলে ধরতে হবে।
মোদীর নির্দেশের পর দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, এই পুরুষ, মহিলা কর্মীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিকূল পরিবেশে কাজ করেন। ওদের কমান্ডাররা নিশ্চয়ই বাহিনীতে শৃঙ্খলা বজায় রাখবেন কিন্তু শাস্তি যেন অপরাধের সঙ্গে মানানসই হয়। অর্থাত বেতন কেটে নেওয়ার নির্দেশ যে সুবিবেচনাপ্রসূত হয়নি, তা বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
এই প্রথম বিতর্কে জড়ালো না বিএসএফ। গত বছর জানুয়ারিতে বরখাস্ত করা হয়েছিল জম্মু ও কাশ্মীর সীমান্তে মোতায়েন বাহিনীর কনস্টেবল তেজ বাহাদুর যাদবকে, তিনি একাধিক ভিডিও পোস্ট করে জওয়ানদের নিম্নমানের খাবার দেওয়া হয় বলে প্রকাশ্যে অভিযোগ তোলার পর।