নয়াদিল্লি: দেশের সীমান্ত রক্ষার গুরুদায়িত্ব যাদের, সেই বিএসএফ জওয়ানদের খালি পেটে থাকতে হয়। সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-র জওয়ান তেজ বাহাদুর যাদবের এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় দেশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিএসএফের আইজি ডি কে উপাধ্যায় জানিয়েছেন, অভিযোগের যথাযথ তদন্ত হবে। তবে তিনি ওই জওয়ানের ভিডিও পোস্ট করার উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ ব্যক্ত করে কার্যত তাঁর অভিযোগের সারবত্তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন।


আইজি বলেছেন, তদন্তের স্বার্থে যাদবকে বাহিনীর অন্য একটি হেডকোয়ার্টারে সরানো হবে। তিনি বলেছেন, যাতে যাদবের ওপর কেউ চাপ তৈরি করে নিরপেক্ষ তদন্তে কোনও প্রভাব না ফেলতে পারে সেজন্যই তাঁকে সরানো হবে। একইসঙ্গে যাদবের অতীত রেকর্ডের কথা উল্লেখ করে তাঁর ভিডিও পোস্ট করার উদ্দেশ্য সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

আইজি জানিয়েছেন, অতীতে যাদব শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছিলেন। এজন্য ২০১০-এ তাঁর  কোর্ট মার্শালও হয়। কিন্তু পরিবারের কথা মাথায় রেখে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়নি।

উপাধ্যায় বলেছেন, যাদব যে শিবিরে রয়েছেন সেই শিবিরে এর আগে ডিআইজি পর্যায়ের আধিকারিকরা গিয়েছিলেন। কিন্তু যাদবের ভিডিওতে যে অভিযোগ করা হয়েছে সে ধরনের অভিযোগ ডিআইজি পর্যায়ের আধিকারিকরা কখনই পাননি। উপাধ্যায় বলেছেন, ডিআইজি-রা সেখানে গিয়েছিলেন এবং যাদব সহ প্রত্যেকের কাছেই সুবিধা-অসুবিধা জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কেউ কোনও অভিযোগ করেননি। এক্ষেত্রে সম্ভবত উদ্দেশ্যটা আলাদা।

বরাদ্দ খাবার নিয়ে দুর্নীতির চাঞ্চল্যকর অভিযোগ জম্মু ও কাশ্মীরে নিযুক্ত বিএসএফ জওয়ানের, তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া

বিএসএফ ডিআইডি এমডিএস মান বলেছেন, হতাশা থেকেও ভিডিও পোস্ট করে থাকতে পারেন যাদব। কারণ, ২০ বছরের চাকরি জীবনে ওই জওয়ানের নামে চারবার নেতিবাচক কাজের অভিযোগ এসেছে। এজন্য তাঁর পদোন্নতি হয়নি।

উল্লেখ্য, ভারত-পাক সীমান্তে মোতায়ের বিএসএফের ওই জওয়ান তাঁদের খাবারের নিম্নমান নিয়ে ফেসবুকে কয়েকটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। সেই ভিডিওগুলি ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। দেশজুড়ে শোরগোলের পরিপ্রেক্ষিতে বিএসএফ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।

বিএসএফ আইজি অবশ্য মেনে নিয়েছেন, শীতে যে খাবারগুলি দেওয়া হয় তা সুস্বাদু নাও হতে পারে। কারণ, সেগুলি শুকনো ও টিনবন্দী থাকে। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, জওয়ানরা এসব নিয়ে অভিযোগ করেন না। তদন্তে কোনও ত্রুটি পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণেরও আশ্বাস আইজি দিয়েছেন।

জওয়ানের অভিযোগ সম্পর্কে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ইতিমধ্যেই বিএসএফের কাছে রিপোর্ট চেয়েছেন।