নয়াদিল্লি: না আছে পরিশুদ্ধ জল, না মিলছে তীব্র রোদ থেকে বাঁচার সরঞ্জাম। সরকারি লাল ফিতের গেরোয় প্রচণ্ড গরমে ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত পাক-সীমান্তে প্রহরার দায়িত্বে থাকা সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানদের। গুজরাত ও রাজস্থানের ওপরে থাকা ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে এই মুহূর্তে তাপমাত্রার ঊর্ধ্বসীমা হাফ-সেঞ্চুরি পার করেছে। কিন্তু, তা সত্ত্বেও নিরন্তর নজরদারির দায়িত্ব থেকে কোনও রকম রেহাই পাচ্ছেন না প্রহরারত বিএসএফ জওয়ানরা। গুজরাত ও রাজস্থান মিলিয়ে প্রায় ১,৫৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বিস্তৃত সীমান্তের দায়িত্বে রয়েছে বিএসএফ-এর ওপর। সেই নজরদারিতে মোতায়েন রয়েছেন বাহিনীর প্রায় ১১ হাজার জওয়ান এবং ৭ হাজার দফতর-কর্মী। কিন্তু, এত বিশাল বাহিনীর জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার বন্দোবস্তে রয়ে গিয়েছে বিশাল বড় ফাঁক। খবরে প্রকাশ, তীব্র দাবদাহে পাহারা দেওয়া জওয়ানদের তেষ্টা নিবারণের জন্য অন্তত ১০টি জল পরিশুদ্ধ করার যন্ত্র এবং রোদ থেকে রক্ষা পেতে সানগ্লাসের দাবি তুলে দীর্ঘদিন ধরেই কেন্দ্রের কাছে দরবার করে আসছে বাহিনী। পাশাপাশি, হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত জওয়ানকে দ্রুত হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে অ্যাম্বুলেন্স, বাহিনীর নিজস্ব হাসপাতালের জন্য ইসিজি যন্ত্র এবং অতিরিক্ত ছাউনির চাহিদাও জানানো হয়েছে। কিন্তু, সরকারি লাল-ফিতের ফাঁসে সবই আটকে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, বিকল্প উপায়ে ভাবনার পথে কেন্দ্র। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হরিভাই চৌধুরি হিরে ব্যবসায়ীদের কাছে জওয়ানদের অভাব মেটানোর জন্য অভিনব সহযোগিতার প্রস্তাব রেখেছেন। প্রস্তাব অনুযায়ী, আগামী ১৯ তারিখ একটি নিলাম-পর্বের আয়োজন করা হবে। সেখানে যাঁরা সবচেয়ে বেশি দর হাঁকবেন, তাঁরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে সীমান্তে গিয়ে জওয়ানদের সানগ্লাস ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করার সুযোগ পাবেন। চৌধুরি জানান, এই নিলাম-পর্বের মাধ্যমে তিনি ২৫ কোটি টাকা তোলার আশা করছেন। তিনি জানান, প্রায় ১০০ জন ব্যবসায়ী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে সীমান্তে যেতে পারবেন। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, চৌধুরি নিজেও একজন প্রাক্তন হিরে ব্যবসায়ী। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন বাহিনীর ডিজি কে কে শর্মা। সাধারণত, জওয়ানদের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে বাহিনীর স্থানীয় ইউনিটের অনুমোদন প্রয়োজন। বিপুল অর্থের প্রয়োজন হলে তখন আইজি/ডিজি পদমর্যাদার আধিকারিক এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের যুগ্ম সচিব পর্যায় থেকে অনুমোদন প্রয়োজন। চৌধুরির এই প্রস্তাবে সেই অনুমোদনের কোনও প্রয়োজন নেই।