শ্রীনগর: জম্মু ও কাশ্মীরের বদগামে মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হওয়া সন্ত্রাস দমন অভিযানে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এক জঙ্গির মৃত্যু হল। তবে জওয়ানরা যখন ডেরায় আটকে পড়া জঙ্গির মোকাবিলায় ব্যস্ত, তখন সেই জঙ্গিকেই পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে নিরাপত্তাবাহিনীকে টার্গেট করে পাথর ছোঁড়ে স্থানীয় লোকজন। বিরাট মারমুখী জনতাকে সামলাতে পাল্টা আঘাত করে জওয়ানরা। প্রাণ হারায় তিনজন। সকলেই যুবক, বয়স কুড়ির ঘরে। জখম হয়েছে ১৮ জন।


শেষ খবর, জঙ্গি দমন অভিযান শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন এক পুলিশকর্মী। জনৈক সেনাকর্তা বলেন, এক জঙ্গি খতম হয়েছে, সংঘর্ষস্থল থেকে একটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এক আধাসামরিক জওয়ানের জখম হওয়ার খবরও মিলেছে।

পুলিশকর্তাটি জানান, জঙ্গিদের গা ঢাকা দিয়ে থাকার খবর পেয়ে এদিন ভোরে চাদুরার দুরবাগ এলাকা ঘিরে ফেলে তল্লাশি অভিযান শুরু করে নিরাপত্তাবাহিনী। তবে ঘাপটি মেরে থাকা একমাত্র জঙ্গি গুলি চালাতে থাকে। টানা বেশ কয়েক ঘণ্টা গুলির লড়াই চলে। তার মধ্যেই নিরাপত্তাবাহিনীকে নিশানা করে ইট, পাথরবৃষ্টি হতে থাকে। পাথরছোঁড়া জনতার সঙ্গে সংঘর্ষ চলে জওয়ানদের। জাহিদ দার, সাকিব আহমেদ ও ইশফাক আহমেদ ওয়ানি নামে তিন যুবক প্রাণ হারায়। তিনজনের দেহে আগ্নেয়াস্ত্রের আঘাত রয়েছে বলে খবর। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের সংঘর্ষ চলতে থাকার খবর মিলেছে।

গত বছর থেকেই জম্মু ও কাশ্মীরে একটা প্রবণতা  দেখা যাচ্ছে যে, সেনা-আধাসামরিক বাহিনী কোথাও জঙ্গিদের আত্মগোপন করে থাকার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে অভিযানে গেলেই তাদের নিশানা করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে, পাথর ছুঁড়ছে স্থানীয় লোকজন। সেই সুযোগে জওয়ানদের ফাঁকি দিয়ে চম্পট দিচ্ছে জঙ্গিরা। বাধ্য হয়ে সম্প্রতি সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত জানিয়ে দেন, স্থানীয় মানুষ সন্ত্রাস দমন অভিযানে নিরাপত্তাবাহিনীকে বাধা দিলে তাদেরও জঙ্গিদের সহযোগী বলেই ধরা হবে। তাছাড়া সংঘর্ষস্থলের তিন কিমি এলাকাজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করছে রাজ্য প্রশাসন। তাতেও অবশ্য বিক্ষোভে ছেদ পড়েনি।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুুবা মুফতি তিন যুবকের মারা যাওয়ার ঘটনায় গভীর উষ্মা প্রকাশ করে মন্তব্য করেন, এভাবে তাজা প্রাণ চলে যেতে  দেখলে খুব খারাপ লাগে। সেইসঙ্গে তিনি বলেছেন, গত তিন দশকের হিংসায় অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। কাশ্মীরের মানুষ ফল ভুগছেন। আমরা জানি অনেক সমস্যার সমাধান করতে হবে। কিন্তু  হিংসাই দস্তুর হয়ে  উঠলে তা সম্ভব নয়।  সব পক্ষেরই সংযত হয়ে চলার দরকার যাতে ইতিবাচক আবহাওয়া তৈরি হতে পারে, অসন্তোষ থাকলে তাও শান্তিপূর্ণ ভাবে করা উচিত।

এদিকে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা কাল চাদুরায় তিন যুবকের মৃত্যুর প্রতিবাদে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।