নয়াদিল্লি: ২০২৩-র ডিসেম্বরের মধ্যে ভারতে বুলেট ট্রেন প্রকল্পের যাবতীয় কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সব হিসেবনিকেশ উলটে দিয়েছে করোনা মহামারী। ফলে করোনা-কালে প্রকল্প শেষ হতে দেরি হবে বলে মনে করছেন প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত সরকারি আধিকারিকদের একাংশ।
মুম্বই-আমদাবাদ বুলেট ট্রেন প্রকল্প ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। সেই লক্ষ্যে ন্যাশনাল হাই স্পিড রেল কর্পোরেশন ( এনএইচএসআরসিএল) মোট ৬৩ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করেও ফেলেছে। এর মধ্যে গুজরাতের ৭৭ শতাংশ, দাদার নগর হাভেলির ৮০ শতাংশ ২২ শতাংশ জমি রয়েছে মহারাষ্ট্রের। প্রকল্পের ৫০ শতাংশের বেশি জমি অধিগৃহীত হয়ে গেলেও, মহারাষ্ট্রের পালঘর ও গুজরাতের নাভসরি এলাকায় জমি অধিগ্রহণ এখনও ঝুলে রয়েছে।
প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে গত বছর টেন্ডার ডাকা হয়েছিল, কিন্তু করোনার ফলে তা আর শেষ করা যায়নি। এনএইচএসআরসিএলের এম ডি অচল খারের কথায়, কোভিডের জন্য আমাদের কিছু টেন্ডার স্থগিত করে দিতে হয়েছিল। কারণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে গেলে কী ধরনের প্রভাব পড়বে, তা আন্দাজ করা যাচ্ছিল না। সেই পরিস্থিতি এখনও বজায় রয়েছে। আমরা এখনও বুঝতে পারছি না এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে করোনার প্রভাব কতটা সুদূরপ্রসারী হবে।‘‘
তবে সরকারি ভাবে প্রকল্পের ডেডলাইন যা ছিল এখনও তাই রাখা হয়েছে। ৫০৮ কিলোমিটার জুড়ে এই বুলেট ট্রেন চলবে। এর সিংহভাগ অংশের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ। ৩৫৪ কিলোমিটার রাস্তায় কাজের বরাত দিয়ে দেওয়া হয়েছে। গোটা প্রকল্পে ৬টি ভূগর্ভস্থ স্টেশন থাকবে। গুজরাতের সবরমতী নগরে সবরমতী যাত্রী হাব তৈরির কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে।
অতি দ্রুত গতির এই ট্রেনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের জন্য হস্টেল এবং ট্রেনিং ট্র্যাকও ভাদোদরায় তৈরি হয়ে গিয়েছে।
৫০৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই প্রকল্পের ৩টি স্টেশন পড়বে মহারাষ্ট্রে, বাকি ৮টি স্টেশন প়ড়বে গুজরাতে।
প্রকল্পের মোট খরচ ধার্য হয়েছিল এক লক্ষ কোটি টাকা। এর মধ্যে কেন্দ্রের খরচ ১০ হাজার কোটি টাকা, এবং গুজরাত ও মহারাষ্ট্র দুই রাজ্যকে পাঁচ হাজার কোটি টাকা করে দিতে হবে। বাকিটা ০.১ শতাংশ হারে ঋণ হিসেবে দিচ্ছে জাপান।
কিন্তু করোনার জন্য যদি প্রকল্প শেষ হতে দেরি হয়, তা হলে বাড়বে খরচ। জমি অধিগ্রহণের কাজ নিয়েও কিছু জটিলতা রয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক না হলে বুলেট ট্রেন প্রকল্পের কাজ শুরু করা বা পুরোদমে কাজ করা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। তাই সরকারি আধিকারিকদের একাংশ মনে করছেন, প্রকল্প শেষ করতে বাড়তি সময় লাগতে পারে।