নয়াদিল্লি: ব্যবসায়িক পতনকে নিন্দিত বা খারাপ চোখে দেখার কোনও প্রয়োজন নেই। ‘ক্যাফে কফি ডে’-র প্রতিষ্ঠাতা ভি জি সিদ্ধার্থর আত্মহত্যার প্রেক্ষিতে সংসদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বৃহস্পতিবার একথা বলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ।
এদিন লোকসভায় ঋণ শোধের অক্ষমতা ও দেউলিয়া নীতি (আইবিসি) নিয়ে বিতর্ক চলাকালীন নির্মলা বলেন, সম্মানজনক প্রস্থান পাওয়া উচিত ব্যবসায়ীদের। আইবিসি-র নীতিকে আক্ষরিক অর্থে মর্যাদা দিয়ে এই সমস্যার সমাধান করা উচিত। তিনি যোগ করেন, ব্যবসায় ক্ষতি হতেই পারে। এটাকে খারাপ  চোখে দেখা উচিত কাম্য নয়।
এদিন বিতর্কে বক্তব্য রাখতে গিয়ে টিডিপি-র জয়দেব গাল্লা বলেন, ব্যবয়ায়িক ব্যর্থতা হয় অর্থনৈতিক পতন বা ব্যবসা-চক্রের জন্য। তিনি যোগ করেন, ব্যাঙ্কগুলির দায়বদ্ধতা ও ভূমিকারও পর্যালোচনা হওয়া উচিত। তাঁর মতে, ঋণ নেওয়ার সময় ব্যাঙ্কে ব্যক্তিগত গ্যারান্টির ফলেও এধরনের পদক্ষেপ অনেকে নিতে বাধ্য হন।
তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিলে তা ফেরত দিতেই হবে। বিজেডির পিনাকী মিশ্র বলেন, সিদ্ধার্থর আত্মহত্যা বুঝিয়ে দিচ্ছে, এদেশে দেউলিয়া অবস্থা কতটা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এভাবে চললে দেশ কখনই ৫ লক্ষ কোটির অর্থনীতি হবে না।
বুধবার, কর্ণাটকের নেত্রাবতী নদীর পার থেকে সিদ্ধার্থর দেহ উদ্ধার হয়। তার আগে, একটি চিঠিতে তিনি অভিযোগ করে যান যে, অন্যান্য কারণের পাশাপাশি আয়কর দফতরের ক্রমাগত হয়রানির জন্যই তিনি চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে (আত্মহত্যা করতে) বাধ্য হচ্ছেন। যদিও, হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার করেছে আয়কর দফতর।
সিদ্ধার্থর রহস্যমৃত্যুর তদন্তে একটি বিশেষ পুলিশ টিম গঠন করেছে কর্ণাটক সরকার। বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার সন্দীপ পাতিল জানিয়েছেন, অ্যাসিস্টেন্ট কমিশনারের নেতৃত্বে গঠিত ওই টিম শিল্পপতির মৃত্যু-তদন্ত করবে। তিনি আরও জানান, পোস্ট-মর্টেমের রিপোর্ট এলেই বোঝা যাবে ঠিক কীভাবে সিদ্ধার্থর মৃত্যু হয়েছে।
এর মধ্যেই, বেঙ্গালুরু পুলিশের একটি টিম নিহত শিল্পপতির সংস্থা 'ক্যাফে কফি ডে'-র কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। এখনও পর্যন্ত সিদ্ধার্থর দুটি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণর জামাতা সিদ্ধার্থ গত সোমবার রাত থেকে দক্ষিণ কন্নড় জেলার উল্লালায় নেত্রাবতী সেতুর কাছ থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। বুধবার, তাঁর দেহ নদীতে ভেসে ওঠে।