নয়াদিল্লি: সীমান্তে চিন ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের মধ্যেই কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি)-র রিপোর্টে ভারতীয় সেনার গোলাবারুদের ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হল। সিএজি-র রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতীয় সেনার যে পরিমাণ গোলাবারুদ মজুত রয়েছে তা যুদ্ধের সময় মাত্র দশ দিনের চাহিদা মেটাতে পারে।
সংসদে পেশ করা রিপোর্টে সিএজি বলেছেন, যুদ্ধের জন্য সেনার কাছে অন্তত ৪০ দিনের ওয়ার রিজার্ভ থাকা উচিত। যদিও সেনা ওই পরিমাণ কমিয়ে ২০ দিনের ‘অপারেশনাল ওয়ার রিজার্ভ’ করেছে। কিন্তু এরপরও সেনার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ যেসব গোলাবারুদের মজুত রয়েছে যেগুলিতে মাত্র ১০ দিন কাজ চালানো সম্ভব।
সিএজি-র রিপোর্টে খারাপ গোলাবারুদ নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, খারাপ গোলাবারুদ খুঁজে বের করতেই অনেকটা সময় চলে যায়। খারাপ হয়ে যাওয়া গোলাবারুদ যথা সময়ে সঠিক স্থানে না পাঠানোর অস্ত্রাগারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাও ঘটেছে।
এমন একটা সময় এই রিপোর্ট পেশ করা হয় যখন ডোকা লা বিতর্ককে কেন্দ্র করে চিন ভারতকে যুদ্ধের হুমকি দিচ্ছে এবং পাকিস্তান প্রতিদিনই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে কার্যত অঘোষিত যুদ্ধ  চালাচ্ছে।
সেনার গোলাবারুদের অভাব নিয়ে সিএজি-র উদ্বেগ প্রথম নয়।২০১৫-র রিপোর্টে সিএসি প্রতিরক্ষামন্ত্রক ও অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড (এএফবি)-র কাজের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। প্রতিরক্ষামন্ত্রকই সেনার জন্য পর্যাপ্ত গোলাবারুদের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। অন্যদিকে, অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি গোলা-বারুদ সরবরাহের কেন্দ্র। সেনাকে সেগুলি সরবরাহ করে অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি।
সিএজি-র রিপোর্ট অনুযায়ী, এএফবি প্রয়োজনীয় গোলাবারুদ সরবরাহ করতে না পারায় প্রতিরক্ষামন্ত্রক গোলাবারুদ আমদানি করার পরিকল্পনা নিয়েছিল। কিন্তু ওই প্রক্রিয়া এতটাই ঢিমে গতির যে সেনা মোট চাহিদার ২০ শতাংশই সরবরাহ পেয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তমান বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহ যখন সেনাবাহিনীর প্রধান ছিলেন তখন তিনি তোপখানায় গোলাবারুদ কম থাকার বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। এ ব্যাপারে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে লেখা তাঁর চিঠি ফাঁস হয়ে যাওয়ার শোরগোল পড়ে গিয়েছিল।
সিএজি-র রিপোর্টে নৌসেনার কার্যকলাপ নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে, গত ১০ বছরে ৩৮ টি বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে যুদ্ধজাহাজ ও ডুবোজাহাজের ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু দুর্ঘটনা রোখার মতো কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।