নয়াদিল্লি:   বিয়ে বা নিকার সময় মুসলিম মহিলাদের তিন তালাক প্রথায় না বলার অধিকার দেওয়া যাবে?  আদালতে এই মামলার শুনানির সময় আজ অল ইন্ডিয়া মুসলিম ল বোর্ডকে প্রশ্ন করল দেশের শীর্ষ আদালত। মুসলিম মতে নিকাহনামা হল একটি নির্দেশাবলী যা যেকোনও মুসলিম দম্পতিকে বিয়ের পর মেনে চলতে হয়। এছাড়া মুসলিম ল বর্ডের কাছে সুপ্রিম কোর্ট জানতে চেয়েছে বোর্ডের নির্দেশ কী নিম্ন স্তরে সমস্ত মুসলিম কাজীদের মেনে চলতেই হবে?

এর জবাবে এআইএমপিএলবি-র আইনজীবী ইউসুফ মুচালা জানিয়েছেন, কাজীদের নীচু স্তরে বোর্ডের নির্দেশ মানতেই হবে, এমন কোনও নিয়ম নেই। এর আগে বিতর্কিত এই তিন তালাক মামালায় এআইএমপিএলবি-র হয়ে দেশের শীর্ষ আদালতে সওয়াল করেছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল। তাঁর দাবি ছিল, এটা সম্পূর্ণ কোনও এক বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষের নিজস্ব বিশ্বাসের বিষয়, এখানে আদালতের নাকগলানোর প্রয়োজন নেই। সেপ্রসঙ্গে তিনি অযোধ্যা প্রসঙ্গের উল্লেখ করে বলেন, যদি অযোধ্যা রামজন্মভূমি এটা হিন্দুদের ধর্ম বিশ্বাস হয়, তাহলে তিন তালাকও মুসলিম ধর্মাবলম্বীর মানুষের ঐকান্তিক বিশ্বাস। সেটা নিয়ে আদালতের প্রশ্ন তোলা কখনওউ উচিত্ নয়। যদি ১৪০০ বছর ধরে একটা প্রথা চলতে পারে, তাহলে হঠাত্ করে সেটা অসাংবিধানিক কীভাবে বলা যায়?

এরপর সুপ্রিম কোর্টের বিচারক কুরিয়েন জোসেফ জানতে চান, যদি সেই বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষই মনে করেন, তিন তালাক যুক্তিসঙ্গত নয়, সেপ্রসঙ্গে মুসলিম ল বোর্ডের কী মত? এই বক্তব্যের পাল্টা এআইএমপিএলবি-র সিনিয়র কাউন্সেল ইউসুফ মুচালা বলেন, যেভাবে তিন তালাক দেওয়া হয়, সেটা মোটেই সঠিক নয়। তাই তাঁরা চেষ্টা করছেন মানুষকে সঠিক শিক্ষা দিতে, যার ফলে এই প্রথার সঠিক ব্যবহার হবে। তাঁরা মুসলিম সম্প্রদায়ের পুরুষদের বোঝাচ্ছেন তিন তালাক প্রথাকে অভ্যাসে না বদলে ফেলতে।

প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিব্বল এই মামলার শুনানিতে সওয়াল করতে গিয়ে বলেন, তিন তালাক কোনও স্থায়ী বিষয় নয়। এটা যে সম্প্রদায়ের, তাঁরা যদি বিষয়টা থেকে বেরিয়ে আসতে চান, তাহলে কারও কোনও আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু সেবিষয়ে নাকগলিয়ে জোর করে আদালতের কিছু চাপিয়ে দেওয়া উচিত্ হবে না। প্রত্যেক সম্প্রদায়ের আলাদা রীতি রেওয়াজ আছে। সেটা মেনে নিতে হবে আদালতকে। যদি এটা খারাপ হয়, তাহলে এই সম্প্রদায়ের মানুষকে শিক্ষা দিয়ে, কথা বলে, আলোচনা করে তবেই তুলে দেওয়া উচিত্ তিন তালাক প্রথা, মত সিব্বলের।