নয়াদিল্লি: লেডিজ ভার্সাস রিকি বহেল ছবির রণবীর সিংহের কথা মনে আছে নিশ্চয়। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বা অন্যভাবে মেয়েদের ঠকিয়ে টাকা আদায় ছিল তার পেশা। সেই ছবি থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই ৬ বছর ধরে দিব্যি রমরমিয়ে লোক ঠকিয়ে চলেছিল দিল্লির ৩৪ বছরের যোগেশ ওরফে সমীর গর্গ। কিন্তু সকলের কপালে তো আর অনুষ্কা শর্মা জোটে না। তাই সমীরকে ধরে ফেলেছে পুলিশ, জায়গা হয়েছে শ্রীঘরে।


২০১১ সালে মুক্তি পায় লেডিজ ভার্সাস রিকি বহেল। ছবিটা দেখে ফেলে সমীর। পেয়ে যায় মেয়েদের ঠকিয়ে রোজগারের হাতে গরম আইডিয়া। সাধারণত সে টার্গেট করত তিরিশের শেষ ধাপে পৌঁছনো অবিবাহিত মহিলাদের। ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইট থেকে তাঁদের নাম ঠিকানা জোগাড় করত। নিজের পরিচয় দিত এক হাইপ্রোফাইল কনগ্লোমারেট ফার্মের কান্ট্রি হেড হিসেবে। বলত, বাবা অবসরপ্রাপ্ত আইএএস, সে নিজে এমবিএ করেছে কোনও একটা আইআইএম থেকে।

এই সব বলে মহিলাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে তাঁদের ভিডিও তুলত। ব্ল্যাকমেল করত, টাকা না দিলে প্রকাশ করে দেবে সেই ভিডিও। এই করে শুধু গত বছরেই ১৫ জন মহিলার কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা আদায় করেছে সে।

৫ তারিখ এক ডিভোর্সি মহিলার ভাই পুলিশে অভিযোগ করেন, তাঁর বোন ও বোনের ১২ বছরের ছেলেকে ২ দিন ধরে পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ জানতে পারে, নিজের প্রোফাইল একটি ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটে আপলোড করেন তিনি, তখন সমীরের সঙ্গে পরিচয় হয়। এর মধ্যে মহিলার ভাই কোনওভাবে যোগাযোগ করতে পারেন বোনের সঙ্গে। তিনি ফোন করে তাঁকে মিথ্যে বলেন, তাঁদের বাবা অসুস্থ, এইমসে ভর্তি। শুনে তিনি হাসপাতালে আসতে রাজি হন, তবে বলেন, শিগগিরই মুম্বই রওনা দেবেন তিনি।

সমীর নিজে আসে মহিলাকে নিয়ে। কিন্তু কিছু সন্দেহ হওয়ায় তাঁকে নিয়ে চম্পট দেয় সে। পুলিশ তার মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে সেদিনই তাকে গ্রেফতার করে নয়াদিল্লি রেল স্টেশন থেকে। সে ওই মহিলা ও তাঁর ছেলেকে নিয়ে মুম্বইমুখী ট্রেনে উঠে পড়েছিল।

মহিলা জানিয়েছেন, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁকে প্রতারণা করে সমীর। তাঁকে নিয়ে বৈষ্ণো দেবী ও গোয়া ঘুরে আসে। তাঁর ভিডিও তুলে তা ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আদায় করেছে ৩ লাখ টাকা। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণেরও অভিযোগ আনা হয়েছে।

শুধু ওই মহিলা নন, আরও ৫ জন মহিলা সমীরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, বিয়ের কথা বলে সমীর তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে আদায় করেছে ৮ লাখ টাকা করে।