বেঙ্গালুরু: এই সুখা মরশুমেও তামিলনাড়ুকে দিতে হয়েছে কাবেরীর জলের ভাগ। প্রতিবাদে উত্তাল বেঙ্গালুরু সহ গোটা কর্নাটক। শুক্রবার রাজ্যজুড়ে বনধে সর্বাত্মক সাড়া মিলেছে, রাজধানী সহ বেশ কিছু এলাকায় জনজীবন পুরোপুরি বিপর্যস্ত।


পথে নামেনি সরকারি বাস। বনধ সমর্থন করেছে অটোরিকশা ও ট্যাক্সি ইউনিয়নও। বন্ধ মেট্রো পরিষেবা। অশান্তির আশঙ্কায় স্কুল কলেজগুলিতে আগেভাগেই ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারি অফিস খোলা থাকলেও হাজির হাতে গোনা কয়েকজন। বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী চেষ্টা করেন কেম্পে গৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঢুকে বিমান চলাচলে বাধা সৃষ্টি করতে, তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। শহরে আসার কোনও পরিবহণ না থাকায় বিমানবন্দরেই আটকে পড়েছেন অন্যান্য শহর থেকে আসা বহু যাত্রী। একই অবস্থা রেল স্টেশনেও।

বেঙ্গালুরুর ১ কোটি বাসিন্দার জন্য পানীয় জল বলতে শুধু ওই কাবেরী নদীর জল। ফলে জলবণ্টন ইস্যু এখানকার নাগরিকদের কাছে মোটেই হেলাফেলার নয়। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে ইনফোসিস ও উইপ্রো সহ অন্তত ৪০০টি বহুজাতিক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা এদিন ছুটি ঘোষণা করেছে। যানবাহন না চলায় বেঙ্গালুরুর কুখ্যাত ট্রাফিক জ্যাম নেই ঠিকই কিন্তু শহরের বিভিন্ন জায়গায় চলছে বিক্ষোভ আন্দোলন।

দুধ আর হাসপাতালের মত অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বনধের আওতায় পড়বে না বলে সরকার ঘোষণা করলেও ওষুধের দোকানগুলি সব বন্ধ রয়েছে।

বনধের সমর্থনে কাজ বন্ধ কন্নড় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও। কেবল টিভি চ্যানেলগুলো স্থির করেছে, শুক্রবার কোনও তামিল চ্যানেল সম্প্রচার করা হবে না। অভিনেতা অভিনেত্রীরা বেঙ্গালুরুতে বার করবেন প্রতিবাদ মিছিল, বহু নামিদামি নায়ক নায়িকার তাতে যোগ দেওয়ার কথা।

বনধ উপলক্ষ্যে সমাজবিরোধীরা যাতে গোলমাল পাকাতে না পারে, তাই শহরজুড়ে মোতায়েন বেঙ্গালুরু পুলিশ। তৈরি রাখা রয়েছে র‍্যাফ, কর্নাটক স্টেট রিজার্ভ পুলিশ, আর্মড রিজার্ভ ফোর্সেস ও হয়সালা ইউনিট। তামিলনাড়ুর রেজিস্ট্রেশন নম্বর গাড়িতে লাগিয়ে কর্নাটকে প্রবেশ না করার নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য সরকার। জল সম্পদ দফতরকে চিঠি লিখে তারা নির্দেশ দিয়েছে, একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে, যারা কর্নাটকের বাস্তব পরিস্থিতি বিচার করে জানাবে, তামিলনাড়ুকে জল দেওয়া উচিত কিনা।

বিরোধী বিজেপি এই বনধ সমর্থন করেছে। তবে সরকারি সম্পত্তির কোনও ক্ষতি না করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বনধ সমর্থকদের অনুরোধ করেছেন।

সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, তামিলনাড়ুর চাষবাসের কথা মাথায় রেখে কর্নাটককে ১০দিন ধরে প্রতিদিন ১৫,০০০ কিউসেক জল ছাড়তে হবে। এরপরই উত্তাল হয়ে উঠেছে দক্ষিণের এই সমৃদ্ধ রাজ্য।