নয়াদিল্লি: ২০০৬-এ রাঁচি ও পুরীতে হোটেল বন্টনে টেন্ডার-দুর্নীতির অভিযোগে প্রাক্তন রেলমন্ত্রী তথা আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব সহ আরও তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করল সিবিআই। লালু ছাড়াও তাঁর স্ত্রী রাবড়ি দেবী, তাঁদের ছেলে তেজস্বী এবং আইআরসিটিসি-র এক প্রাক্তন ম্যানেজারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এই মামলায় শুক্রবার লালুপ্রসাদের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। পটনায় লালুর বাড়ি ছাড়াও দিল্লি, রাঁচি, পুরী, গুরুগ্রাম-সহ ১২টি জায়গায় ‍আজ একযোগে তল্লাশি চালান সিবিআই অফিসাররা।


১২ বছর আগে লালু যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন তখন রেলের দুটি হোটেল একটি বেসরকারি সংস্থাকে হস্তান্তর করা হয়েছিল। সেই ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। অভিযোগ ওই বেসরকারি সংস্থা লালুর সাহায্যপুষ্ট পটনার একটি সংস্থাকে হোটেল পাওয়ার বিনিময়ে ২ একর জমি দিয়েছিল। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই এদিন সকাল থেকে তল্লাশি শুরু করে সিবিআই। এ বিষয়ে সিবিআই-এর অতিরিক্ত ডিরেক্টর রাকেশ আস্তানা বলেছেন, ২০০৪ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র হয়েছে। সুজাতা হোটেলকে টেন্ডার পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল। বিনিময়ে সুজাতা হোটেল কর্তৃপক্ষ লালুর পরিবারকে স্বল্পমূল্যে পটনায় তিন একর জমি দেয়।

লালু এদিন পশুখাদ্য মামলায় আদালতে হাজিরা দেওয়ার জন্য রাঁচিতে ছিলেন। তাঁর দাবি, প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে বিজেপি। তিনি দেশ থেকে বিজেপি-কে উৎখাত করবেন। পটনায় ফিরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে লালুর হুঁশিয়ারি, ‘নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ শুনে রাখো, আমাকে ফাঁসি দেওয়া হতে পারে। কিন্তু তার আগে তোমাদের অহঙ্কার চূর্ণ করে দেব। তোমরা মহাজোটে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছ। আমরা এবং বিহারের সব মানুষ সেটা বুঝতে পারছি। আমরা বিজেপি-কে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সূরজেওয়ালাও লালু ও তাঁর পরিবারের লোকেদের বাসভবনে সিবিআই তল্লাশির সমালোচনা করেছেন। তাঁর দাবি, আইন আইনের পথে নিরপেক্ষভাবে চলা উচিত। কিন্তু যখন সিবিআই বা ইডি-র মতো সংস্থাগুলি বিজেপি-র হাতের পুতুলে পরিণত হয়ে নোংরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়, তখন সেটা গণতন্ত্রের পক্ষে ভাল হয় না।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু অবশ্য রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, সিবিআই-কে অতীতে কাজ করতে দেওয়া হত না। এখন সিবিআই নিজের কাজ করছে। অবশ্যই তদন্ত হওয়া উচিত। এর মধ্যে কোথাও বিজেপি নেই। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ কেন উঠছে সেটাই তিনি বুঝতে পারছেন না।