লখনউ: বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশী ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উমা ভারতীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি ষড়যন্ত্রের অভিযোগে চার্জ গঠন করল লখনউয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত। ১৯৯২ সালে অযোধ্যায় বাবরি ভেঙে ফেলার ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে এঁদের ভূমিকা নিয়ে।


এককালের উগ্র হিন্দুত্ববাদী নেত্রী স্বাধ্বী রিতাম্ভরা, বিজেপি সাংসদ বিনয় কাটিয়ার, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নেতা বিষ্ণু হরি ডালমিয়ার বিরুদ্ধেও একই অভিযোগে চার্জ গঠিত হয়েছে।

ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০-বি ধারায় অভিযুক্ত হয়েছেন বিজেপি, সঙ্ঘ পরিবারের নেতা-নেত্রীরা। এই ধারায় দোষী প্রমাণিত হলে আডবাণী ও বাকিদের কমপক্ষে দু বছর জেলে কাটাতে হবে।

এই ৬ জনের পাশাপাশি ষড়যন্ত্রের অভিযোগে চার্জ গঠন করা হয়েছে রামবিলাস বেদান্তি, বৈকুণ্ঠ লাল শর্মা, চম্পট রাই বনশল, মহন্ত নৃত্যগোপাল দাশ, ধরম দাশ, সতীশ প্রধানের বিরুদ্ধেও। বাবরি কাঠামোটি ১৯৯২-এর ৬ ডিসেম্বর গুঁড়িয়ে দেওয়ার সময় এঁরা সকলেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

ফলে লখনউয়ের আদালতের এদিনের পদক্ষেপ প্রবল অস্বস্তির কাঁটা হয়ে রইল বিজেপির সামনে। নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা খেলেন কেন্দ্রের শাসক শিবিরের প্রথম সারির এই নেতারা।
এদিন আত্মরক্ষার শেষ চেষ্টা হিসাবে ফৌজদারি চক্রান্তের অভিযোগ বাদ দেওয়ার জন্য রেহাই চেয়ে আবেদন করেন আডবাণী ও বাকিরা। দাবি করেন, বাবরি ভাঙায় কোনও হাতই ছিল না তাঁদের। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। আদালত জানায়, তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলার মতো যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। ধর্মের ভিত্তিতে বিভিন্ন গোষ্ঠী, সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির অভিযোগ তাঁদের বিরুদ্ধে আগে থেকেই ছিল। এদিন তার সঙ্গে যুক্ত হল ফৌজদারি ষড়যন্ত্রের অভিযোগ।

তবে মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পান এদিন আদালতে হাজির হওয়া ১২ জনের সকলেই। সিবিআই তাঁদের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে।

প্রসঙ্গত, তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি চক্রান্তের মারাত্মকর অভিযোগটি গত ১৯ এপ্রিল জিইয়ে তোলে সুপ্রিম কোর্ট। এই সংক্রান্ত দুটি মামলা যুক্ত করার নির্দেশ দেয়, তাছাড়া দু বছরের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতেও বলে। সিবিআই আডবাণীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ষড়যন্ত্রের অভিযোগ জিইয়ে তোলার আবেদনে সম্মতি দিয়ে বাবরি ভেঙে ফেলার ঘটনাকে 'অপরাধ' বলেছিল সর্বোচ্চ আদালত। বাবরি ধ্বংসের ঘটনা দেশের 'সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রকেই নড়িয়ে দিয়েছিল' বলেও অভিমত জানিয়েছিল।