নয়াদিল্লি: করোনা ভাইরাসের নতুন স্ট্রেনের আতঙ্ক ব্রিটেন জুড়ে। ভারতে এই স্ট্রেন পাওয়া না গেলেও, নতুন প্রজাতির এই ভাইরাসের ওপর নজর রাখতে 'জিনোমিক সার্ভেল্যান্স কনসরটিয়াম' গঠন করল কেন্দ্র।
দিল্লিতে ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি)-এর নেতৃত্বে এই সার্ভেল্যান্স কনসরটিয়াম কাজ করবে। ব্রিটেন থেকে ফিরে আসা ৫০ জনের জিনোম সিকোয়েন্স করা হচ্ছে বিভিন্ন গবেষণাগারে।
শনিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে পাঁচ শতাংশ কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর নমুনা জিনোম সিকোয়েন্স করা হবে।
মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, ব্রিটেনে করোনা ভাইরাসের নতুন স্ট্রেন ধরা পড়ার ফলে এদেশেও দ্রুত চিহ্নিতকরণের জন্য জিনোম সিকোয়েন্স চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রকের মতে, তাছাড়া এটাও মনে রাখা দরকার অন্য সমস্ত আরএনএ ভাইরাসগুলির মতো, সার্স-সিওভি-২ ভাইরাসও ঘনঘন চরিত্র বদল করে। মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বিধি বজায় রাখা এবং যখন প্রতিষেধক পাওয়া যাবে তা নেওয়ার মাধ্যমে পরিবর্তিত এই ভাইরাসটির সংক্রমণ রোখা যেতে পারে।
ব্রিটেনে করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেন মেলার পরে অতি সতর্ক ভারত। করোনা টেস্ট, চিকিৎসা এবং নজরদারি চালানোর কৌশল নিয়ে আলোচনা করতে শনিবার আলোচনায় বসেছিল ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স। নেতৃত্বে ছিলেন নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) ভি কে পল এবং আইসিএমআরের ডিরেক্টর জেনারেল বলরাম ভার্গব।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যেহেতু ব্রিটেনের এই নয়া স্ট্রেন ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত, তাই এই স্ট্রেনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ভারতে চিহ্নিত করা বেশ কঠিন।
তবে জাতীয় টাস্ক ফোর্স জানিয়ে দিয়েছে, এখনি চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রোটোকল পরিবর্তন করার দরকার নেই। সার্স-সিওভি-২ ভাইরাসের জিনোমিক সার্ভেল্যান্স চালিয়ে যাওয়া যে বেশ কঠিন তাও জানিয়েছে টাস্ক ফোর্স।
সব গবেষণাগারে এধরনের পরীক্ষা করার মতো কাঠামো নেই। দিল্লি, হায়দরাবাদ ও ভুবনেশ্বরে এধরনের জিনোম সিকোয়েন্স করা হয়। রাজ্যে এ ধরনের পরীক্ষা হয় কল্যাণীর ডিবিটি-ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিক্যাল জিনোমিক্সে।
তবে নয়া করোনা ভাইরাসের স্ট্রেন যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেইজন্য ২১ থেকে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে ব্রিটেন থেকে ভারতে ফেরা সব যাত্রীদের আরটি-পিসিআর টেস্ট করা হয়েছে।
যাঁদের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে তাঁদের প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে আইসোলেশনে রেখে হোল জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হচ্ছে। জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে নিয়ে তারপরেই তাঁদের বাড়ি ফেরার অনুমতি দেওয়া হবে।
শুধু তাই নয়, ২৫ নভেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে যাঁরা ব্রিটেন থেকে ফিরেছেন তাঁদের উপরেও স্টেট সার্ভেল্যান্স ইউনিট ও ডিস্ট্রিক্ট সার্ভেল্যান্স ইউনিটের মাধ্যমে নজরদারি রাখা হচ্ছে। এঁদের মধ্যে যাঁরা ইতিমধ্যেই সংক্রমিত হয়েছেন তাঁদের সকলের জিনোম সিকোয়েন্স করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।