নয়াদিল্লি: নোট বাতিলে দেশ, জনগণের সর্বনাশ হবে বলে দাবি করে তীব্র বিরোধিতার রাস্তায় নেমেছেন মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়, অরবিন্দ কেজরীবালরা। কংগ্রেস সহ বিরোধী শিবির গতকাল দেশজুড়ে প্রতিবাদে আক্রোশ দিবস পালন করেছে। সংসদেও এককাট্টা বিরোধীরা। এই অবস্থায় নোট বাতিল ইস্যুতে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের পাশে পেতে তত্পর হল কেন্দ্রের এনডিএ সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চাইছেন, নগদ অর্থে লেনদেন কমিয়ে ক্যাশলেস অর্থনীতি অর্থাত্ কার্ড নির্ভর লেনদেনে জোর দিক জনগণ। কীভাবে ভারতকে নগদহীন অর্থনীতি চালু করা যায়, তার পন্থা-পদ্ধতি স্থির করতে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে তৈরি একটি কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা ভাবছে কেন্দ্র। কমিটি এ ব্যাপারে প্রস্তাব-সুপারিশ করবে।


ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি কমিটির মাথায় বসার প্রস্তাব দিয়ে যোগাযোগ করেছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর সঙ্গে। কমিটিতে রাখা হবে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশকুমার, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী  নবীন পট্টনায়ককে। সূত্রের খবর, এই তিনজনের সঙ্গে এর মধ্যেই কথা হয়েছে জেটলির। ঘটনা হল, তিনজনই প্রকাশ্যে  মোদীর নোট বাতিলের কর্মসূচিকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেছেন। কমিটিতে রাখা হচ্ছে বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানকে।


প্যানেল খতিয়ে দেখবে প্রধানমন্ত্রী ৮ নভেম্বর ৫০০, ১০০০ টাকার নোট বাতিল ঘোষণা করার জেরে দেশব্যাপী ঠিক কী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমজনতার নানা দুর্ভোগ, হয়রানির খবর আসতে থাকায় তাদের এও দেখতে বলা হয়েছে, মানুষকে সুরাহা দিতে কী কী করা যেতে পারে। পাশাপাশি নগদহীন অর্থনীতির পথে এগনোর রোডম্যাপ দেবে তারা।


কমিটিতে কংগ্রেস ও বামশাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের কাকে রাখা হবে, তা ঠিক হয়নি। সূত্রের খবর, পুদুচেরি, হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীদের কথা ভাবা হয়েছে। হরিশ রাওয়াতের নামও শোনা যাচ্ছে। বাম শিবির থেকে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার কমিটিতে থাকতে পারেন। উল্লেখ্য মানিকবাবু পার্টির লাইন মেনেই নোট বাতিলের বিরুদ্ধে মুখর হয়েছেন।


প্রসঙ্গত, সংসদের দুই কক্ষেই মমতার তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টির সঙ্গে একযোগে নোট বাতিলের বিরুদ্ধে মুখর কংগ্রেস। বামেরাও সুর মিলিয়েছে তাদের সঙ্গে। ফলে আজ নিয়ে টানা আটদিন অচল ছিল সংসদ।


সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে কমিটি গঠন করে ক্ষোভ সামাল দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে খোদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও)। মুখ্যমন্ত্রীদের নামের ব্যাপারে ঐকমত্য হলেই আনুষ্ঠানিকভাবে কমিটির ঘোষণা  করা হবে বলে খবর।