নয়াদিল্লি: রাজ্যে রামনবমী উদযাপনের মিছিল ঘিরে অশান্তি, হিংসার ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে রিপোর্ট চাইল কেন্দ্র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের জনৈক মুখপাত্র বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার রাজ্যের কয়েকটি জায়গায় গত তিনচারদিনের অশান্তির পর স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরাতে কী কী পদক্ষেপ করছে, হিংসায় জড়িত দোষীদের বিরুদ্ধেই বা কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা রিপোর্টে জানাতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানতে চেয়েছে অশান্ত এলাকাগুলিতে বর্তমানে কী পরিস্থিতি রয়েছে।
এক বার্তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে, শান্তি বজায় রাখতে আধা সামরিক বাহিনী পাঠিয়ে সাহায্য করতেও কেন্দ্র রাজি বলে জানানো হয়েছে। যদিও নবান্নের সিদ্ধান্ত, কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য তারা নেবে না। তৃণমূল কংগ্রেস মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রী নেবেন। তবে আমাদের পুলিশের উপর যথেষ্ট ভরসা আছে। রাজ্যের যুক্তি, দার্জিলিংয়ে মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহার করতে চেয়ে কেন্দ্র আদালত পর্যন্ত চলে যায়। তাই সেখানে যখন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গিয়েছে, তখন রানিগঞ্জ, আসানসোলেও পুলিশ দিয়েই অশান্তি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। কলকাতা পুলিশের এসিপি বিনীত গোয়েলের নেতৃত্বে রানিগঞ্জে পাঠানো হচ্ছে দুই আইপিএস অফিসার জাভেদ শামিম ও সিদ্ধিনাথ গুপ্তকেও।
এর মধ্যে কেন্দ্রের রিপোর্ট তলব নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, পশ্চিমবঙ্গের মতো বিহারের একাধিক জায়গাও গোষ্ঠীসংঘর্ষে উত্তপ্ত। তাহলে সেই রাজ্যের কাছে মোদি সরকার অশান্তি নিয়ে রিপোর্ট চাইল না কেন? বহুজন সমাজ পার্টির সভানেত্রী মায়াবতীও প্রশ্ন তুলেছেন, এনডিএ শাসিত রাজ্য বলেই কি বিহারকে ছাড়, আর পশ্চিমবঙ্গকে টার্গেট করে রিপোর্ট তলব?
পাল্টা রানিগঞ্জ, আসানসোলের অশান্তিকে হাতিয়ার করে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, পুলিশের দুরবস্থা এই ঘটনায় পরিষ্কার। পুলিশ নিজেদের সুরক্ষা দিতে পারছে না। পুলিশ যথেষ্ট ব্যবস্থা নেয়নি। প্রশাসন ব্যর্থ।
রাজ্যে যখন অশান্ত পরিস্থিতি, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফর নিয়েও প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে পদ্ম শিবির।
রামনবমী পালনকে কেন্দ্র করে লাগাতার অশান্তির জেরে পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান পশ্চিম ও রানিগঞ্জে উত্তেজনা রয়েছে। দুজন হিংসার বলি হয়েছেন, পুলিশকর্তা সহ বেশ কয়েকজন জখম হয়েছেন। তবে অশান্তির মধ্যে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্যের চিরাচরিত রীতি বহাল রেখে নজির তৈরি করেছেন বহু মানুষ। মুখ্যমন্ত্রীও কড়া বার্তা দিয়েছেন হিংসার বিরুদ্ধে।


এদিকে রামনবমী পালন ঘিরে অশান্তির প্রেক্ষাপটে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠি শান্তিরক্ষার আবেদন জানালেন। তিনি পিটিআইকে বলেছেন, কোনও হিংসা, সংঘর্ষ কাম্য নয়। মানুষ ধর্মীয় উত্সব করুন শান্তি বজায় রেখে।