এর আগে শেষবার ভারতীয় দূতাবাসকে চিনা বিদেশ মন্ত্রক তলব করে ২০০৮-এর এপ্রিলে, বেজিং অলিম্পিকের মশাল দৌড়ের বিরোধিতায় তিব্বতিরা যখন দিল্লির চিনা দূতাবাসের পাঁচিল বেয়ে ওপরে উঠে পড়েন।
চিনা বিদেশ মন্ত্রক তাদের বিবৃতিতে বলেছে, চিনের স্বার্থক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশে দলাই লামাকে ব্যবহার করা বন্ধ করুক ভারত। ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সংবেদনশীল ইস্যু নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার উচিত ভারতের।
বেজিংয়ের অভিযোগ, চিনের উদ্বেগকে গুরুত্ব না দিয়ে দলাই লামার দীর্ঘপথ সফরের ব্যবস্থা করেছে ভারত-চিন সীমান্তের পূর্বাঞ্চলে, যার ফলে চিনের স্বার্থ ও ভারত-চিন সম্পর্কের গুরুতর ক্ষতি হয়েছে।
অরুণাচল প্রদেশের প্রতিনিধি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু মন্তব্য করেন, অরুণাচল ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই দলাইয়ের এই সফর নিয়ে চিনের নাক গলানো অনুচিত, কারণ এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।
দলাই লামার সফর ধর্মীয়, অরাজনৈতিক বলেও জানিয়ে দেয় দিল্লি।
চিন অবশ্য এই যুক্তি মানতে রাজি নয়। তাদের দাবি, দলাই শুধু ধর্মীয় নেতা নন। অরুণাচলে তাঁর সফর তাই স্রেফ ধর্মীয় কারণে নয়। ভারত ফাঁকা বুলি আওড়াচ্ছে বলে দাবি করেছে তারা।
তবে রাগের পাশাপাশি বেজিং আশাপ্রকাশ করেছে, ভারত-চিন পাশাপাশি ভাল প্রতিবেশীর মত থাকবে। পাশাপাশি তাদের মন্তব্য, ভারতের এই পদক্ষেপ সেই আকাঙ্খা মাটি করতে পারে।
চিনা সংবাদপত্র অবশ্য আরও একধাপ এগিয়ে অভিযোগ করেছে, ভারত তিব্বত কার্ড খেলছে। নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্রুপে ভারতের অন্তর্ভুক্তির যেভাবে বেজিং বিরোধিতা করেছে ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে চিনা পরিকাঠামো নির্মাণ চলছে তার জবাব দিতে দলাই লামাকে তাওয়াং পাঠিয়েছে তারা।
তাদের মতে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীদের পথ অনুসরণ না করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দলাই লামাকে যেভাবে ব্যবহার করছেন, তা বেজিংকে চ্যালেঞ্জ করার সামিল।
তবে দলাই লামার অরুণাচলের নানা প্রান্ত ঘুরে মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করায় চিনের যে রক্তচাপ বেড়েছে, তা পরিষ্কার। কারণ চিন যতই দলাইকে বিচ্ছিন্নতাবাদী, বিভেদকামী নেতা বলে আখ্যা দিক, তিব্বতের সাধারণ মানুষের মধ্যে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা এখনও তুঙ্গে। সেই ধর্মগুরু এবার খোদ চিনের দাবি করা ভূখণ্ড তাওয়াংয়ে চলে আসায় তাদের ভয়, এর প্রভাত তিব্বতেও পড়তে পারে।