নয়াদিল্লি: ২০১৬-র সেপ্টেম্বরের সার্জিকাল স্ট্রাইকের একটি ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পর আলোড়ন। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা আজ সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেন, মোদী সরকার ও বিজেপি সেনাবাহিনীর ওই অভিযানকে রাজনীতির স্বার্থে কাজে লাগাচ্ছে। শাসক দল যেন মনে রাখে, সাহসী জওয়ানদের ঘাম, রক্ত মোদী সরকার, বিজেপির ভোট টানার হাতিয়ার না হয়। কেন্দ্রের সরকার সশস্ত্র বাহিনীর সাহস, ত্যাগের জন্য নিজেরা কৃতিত্ব দাবি করছে, অথচ পাকিস্তানের মোকাবিলার কৌশল, দিশা দেখাতে, পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাস রুখতে তারা ব্যর্থ। কেন্দ্রের সরকার সেনাবাহিনীর জন্য আধুনিক সরঞ্জামের ব্যবস্থা করছে না, তাদের বাজেট বরাদ্দ ছেঁটে দিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।


বলেন, মোদী সরকারের অযোগ্যতা, উদাসীনতার জন্য ১৪৬ জন জওয়ানের প্রাণ গিয়েছে, ২০১৬-র সেপ্টেম্বরের পর পাকিস্তান ১৬০০-র বেশি যুদ্ধবিরতি ভেঙেছে, ৭৯টি সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছে।

পাল্টা বিজেপির অভিযোগ, কংগ্রেস সেনাবাহিনীর দায়বদ্ধতা, সাহস নিয়ে প্রশ্ন করছে, তাদের মনোবল খাটো করছে। সার্জিকাল স্ট্রাইককে রাজনীতির অস্ত্র করছে বিজেপি, কংগ্রেসের এই অভিযোগ উড়িয়ে কেন্দ্রের শাসক দলের দাবি, কংগ্রেস আর মূল স্রোতের দল নেই, জাতীয় রাজনীতিতে একটা ক্ষুদ্র শক্তিতে পরিণত হয়েছে। মনে হয় না, দলটা ৬০ বছর দেশ শাসন করেছে, ৫০ বছরের বেশি একটি পরিবার ওদের মাথায় ছিল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, বিজেপি সত্যিই সার্জিকাল হামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে চাইলে উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত বা কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচনের আগে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংসের দৃশ্যের ভিডিও বের করত।

কংগ্রেস সন্ত্রাসবাদীদের মনোবল চাঙ্গা করছে, পাকিস্তানে বসে থাকা তাদের পৃষ্ঠপোষকদের হাতে ভারত বিরোধী প্রচারের হাতিয়ার তুলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রবিশঙ্কর। বলেন, ২০১৬-য় চালানো সার্জিকাল স্ট্রাইকের সঙ্গে যুক্ত সেনা অফিসাররাই ওই ভিডিওর সত্যি বলে জানিয়ে দিয়েছেন। পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদী ও তাদের মদতদাতারাই বিরোধী দলের বক্তব্যে সবচেয়ে বেশি খুশি হবে। কংগ্রেস পরপর ভোটে হেরে এতই মরিয়া যে, বারবার তারা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর দায়বদ্ধতা, সাহস নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। ভোটের জন্য আর কত নীচে নামবে ওরা? কেন ওই ভিডিও এখনই প্রকাশ করা হল, কোথা থেকে তা এল, এসব প্রশ্ন প্রাসঙ্গিক নয়। কংগ্রেস বলুক, তারা ওই ভিডিও সত্যি না জাল মনে করে, সার্জিকাল হামলা অনুমোদন করে কি করে না।
প্রসাদ এও বলেন, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী আগে সার্জিকাল হামলার পর সরকারের বিরুদ্ধে 'খুন কি দালালি' কটাক্ষ করেছিলেন, তাঁর মা সনিয়া গাঁধী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে তাঁকে কটাক্ষ করেছিলেন 'মওত কী সওদাগর' বলে। রাহুল গাঁধী সঠিক ট্রেনিং-ই পেয়েছেন, ভিন্ন আচরণ করবেন, ভাবাই যায় না।