নয়াদিল্লি:  সেনাপ্রধান সম্পর্কে মন্তব্যের জন্য দলের প্রাক্তন সাংসদ সন্দীপ দীক্ষিতকে তিরস্কার কংগ্রেস সহ সভাপতি রাহুল গাঁধীর। উল্লেখ্য, সন্দীপ মন্তব্য করেছিলেন যে, সেনাপ্রধান ‘রাস্তার গুণ্ডা’র মতো কথা বলছেন।


বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে সন্দীপ তাঁর মন্তব্য প্রত্যাহার করেছেন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।

সন্দীপের ক্ষমা প্রার্থনার পরও বিষয়টি নিয়ে নরম হতে নারাজ কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। ওই মন্তব্যের জন্য সন্দীপকে দল থেকে বহিষ্কার ও কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়াঁ গাঁধীর ক্ষমাপ্রার্থনার দাবিতে অনড় রয়েছে বিজেপি।

সন্দীপ বলেছিলেন, ‘আমাদের সেনাবাহিনী পাক সেনাবাহিনীর মতো মাফিয়া সেনাবাহিনী নয়,  রাস্তার  গুণ্ডার মতো বিবৃতিও দেয় না। সেনা প্রধান যখন রাস্তার গুণ্ডার মতো বিবৃতি দেন তখন খারাপ লাগে’।

দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের ছেলে সন্দীপ আরও বলেন, ভারতীয় সেনাবাহিনী একটি সুভদ্র ও সুশৃঙ্খল এবং মহান প্রতিষ্ঠান। সেই প্রতিষ্ঠানে  রয়েছে বিশেষ সংস্কৃতি।

প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ বলেন, সেনাপ্রধান ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভাবূমর্তি অনুযায়ী কাজ করছেন না। সেনাপ্রধানের রাজনৈতিক বিবৃতি দেওয়া উচিত নয়।

কাশ্মীরে পাথর বৃষ্টির মধ্যে এক তরুণকে সেনার জিপে বেঁধে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে সমর্থন করে জেনারেল রাওয়াতের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই এই মন্তব্য করেছিলেন সন্দীপ।

পরে ট্যুইট করে তিনি বলেন, ‘সেনাপ্রধানের একটি মন্তব্য সম্পর্কে আমার আপত্তি রয়েছে। কিন্তু আমার এ জন্য যথাযথ শব্দ ব্যবহার করা উচিত ছিল। আমি ক্ষমাপ্রার্থী’।

সন্দীপের ওই মন্তব্য সম্পূর্ণ ভ্রান্ত বলে মন্তব্য করেছেন রাহুল। কর্নাটকে প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির বৈঠকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাহুল বলেছেন, ‘সেনা প্রধানের বিরুদ্ধে এ ধরনের মন্তব্য করা উচিত নয়। আমি স্পষ্ট করে দিতে চাই যে, ভারতীয় সেনা আমেদের জন্য কাজ করে, ভারতকে রক্ষা করে। সেনা প্রধানের বিরুদ্ধে কোনও রাজনৈতিক নেতার মন্তব্য করার কোনও প্রয়োজন নেই’।

সন্দীপের ওই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু ট্যুইট করেন- ‘কংগ্রেসের হয়েছেটা কী ? ভারতের সেনা প্রধানকে রাস্তার গুণ্ডা বলার সাহস কংগ্রেস পায় কোথা থেকে!!’

সন্দীপের ওই মন্তব্য থেকে দূরত্ব বাড়িয়েছে কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র মিম আফজল বলেছেন, কংগ্রেসে সেনাবাহিনীকে শ্রদ্ধা করে। সেনাবাহিনীর প্রধানের বিরুদ্ধে  অবাঞ্ছিত শব্দ ব্যবহার করা হলে, তা দুর্ভাগ্যজনক।

দলের প্রবীণ নেতা সি পি যোশী বলেছেন, ওই মন্তব্য একান্তভাবেই সন্দীপের ব্যক্তিগত মন্তব্য। তিনি নিজেই তা পরিষ্কার করে দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে কংগ্রেসের কিছু করার নেই। তাছাড় সন্দীপ ক্ষমা চেয়েছেন। তাই বিষয়টি সমাপ্ত হয়েছে।

অন্যদিকে, বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্রর দাবি, সন্দীপের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে সনিয়াকে। সন্দীপের মতো নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।

সম্বিতের অভিযোগ, কংগ্রেসে এ ধরনের মন্তব্য অতীতেও করেছে। কংগ্রেসের সহ সভাপতি রাহুল গাঁধী তো ‘রক্তের দালালি’-র মতো শব্দ ব্যবহার করেছিলেন।

বিজেপির অন্য এক মুখপাত্র নির্মলা সীতারামন বলেছেন, সন্দীপের ক্ষমাপ্রার্থনায়  কিছু হবে না। সনিয়াকে ক্ষমা চাইতে হবে।