নয়াদিল্লি: মেয়েদের সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য় করে বিতর্কে জড়ালেন মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা। সজ্জন সিংহ ভার্মা নামে কংগ্রেসের এই নেতা ভোপালের বিধায়ক। মেয়েদের বিয়ের বয়স নিয়ে নিজের মতামত দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, মেয়েরা যখন ১৫ বছরেই বাচ্চার জন্ম দিতে পারে, তখন ওদের বিয়ের বয়স ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ করার কী প্রয়োজন? প্রত্যাশিত ভাবেই মধ্য়প্রদেশের প্রাক্তন পূর্তমন্ত্রীর মেয়েদের সম্পর্কে পিছিয়ে পড়া মনোভাবের ইঙ্গিতবাহী মন্তব্যে শোরগোল পড়েছে।


সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান মেয়েদের বিরুদ্ধে ঘটে চলা অপরাধ মোকাবিলায় সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘সম্মান’ কর্মসূচির সূচনা করে মেয়েদের ন্যূনতম বিয়ের বয়স ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ বছর করা উচিত বলে জানান। তারই প্রতিক্রিয়ায় কংগ্রেস নেতার ওই বক্তব্য। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেন, উনি (শিবরাজ সিংহ চৌহান) কি বিজ্ঞানী না বিরাট ডাক্তার যে মেয়েদের বিয়ের বয়স কমপক্ষে ১৮ থেকে বেড়ে ২১ বছর করার পক্ষে সওয়াল করছেন! ভার্মার দাবি, মেয়েরা বয়স ১৫ বছর হলেই সন্তান জন্মদানের জন্য় তৈরি হয়ে যায়। সেইসঙ্গে বলেন, এটা আমার আবিষ্কার নয়। ডাক্তারদেরই রিপোর্ট হল, মেয়েদের ১৫ বছরেই সন্তান ধারনের ক্ষমতা চলে আসে। শুধু এই কারণেই একটি মেয়ে ১৮ হলেই বিয়ের জন্য যথেষ্ট পরিণত বলে ধরে নেওয়া যায়। কমলনাথের অনুগামী বলে পরিচিত ভার্মার সংযোজন, মেয়েদের ১৮ হলেই শ্বশুরবাড়ি গিয়ে সুখে, শান্তিতে সংসার করা উচিত।

বিজেপি দাবি করেছে, এমন মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে দল ছাড়া উচিত ভার্মার। জাতীয় শিশু অধিকার কমিশনও দুদিনের মধ্যে ভার্মার কাছে এব্যাপারে সাফাই চেয়েছে, নাবালিকাদের ও আইন সম্পর্কে এমন বৈষম্যমূলক মন্তব্যের পিছনে কী কারণ, অভিসন্ধি রয়েছে, তাও জানাতে বলা হয়েছে তাঁকে।
অস্বস্তিতে পড়ে কংগ্রেস মুখপাত্র নরেন্দ্র সালুজার সাফাই, এটা ভার্মার নিজস্ব মতামত, দলের সরকারি অবস্থান নয়। রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র নেহা বাগ্গা বলেছেন, মেয়েদের সম্পর্কে এধরনের ভাষা প্রয়োগ করে সজ্জন সিংহ ভার্মা নিজের নাম সজ্জনেরই পরিপন্থী আচরণ করলেন। সজ্জন নামের অর্থ ভদ্রলোক। কিন্তু তাঁর মন্তব্যে তিনি শুধু মধ্যপ্রদেশর নয়, দেশের সব মেয়েকে অপমান করেছেন। মনে হচ্ছে, উনি ভুলে গিয়েছেন, তাঁরই দলের জাতীয় সভাপতি সনিয়া গাঁধী, জাতীয় সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। দুজনেই মহিলা। আমি সনিয়া গাঁধীকে বলব, তিনি ভার্মাকে প্রকাশ্য সব মেয়ের কাছে ক্ষমা চাইতে বলুন, তাঁকে দল থেকেই বহিষ্কার করুন।