নয়াদিল্লি: মৃত গুরুর চামড়া ছাড়ানোর জন্য গুজরাতে দলিতদের মারধরের ঘটনা নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠল সংসদ। এই ঘটনা নিয়ে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করল কংগ্রেস। এদিন লোকসভায় কংগ্রেস অভিযোগ করে, হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি ‘দলিত-মুক্ত ভারত’ গঠনের চেষ্টা করছে। আর এই কাজে মদত দিচ্ছে বিজেপি। গুজরাতে আগামী বছরের বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে বিজেপি এভাবে মেরুকরণের রাজনীতি করছে বলেও অভিযোগ করে কংগ্রেস।


দলিতদের মারধরের ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে যৌথ সংসদীয় দল গঠনের দাবি জানায় বিরোধী দলগুলি। যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, ২০০১-এ নরেন্দ্র মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর রাজ্যে দলিতদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা কমেছে। একইসঙ্গে তিনি বলেন, ওই মারধরের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের আনন্দীবেন সরকার উপযুক্ত ও কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।নয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং নিগৃহীতদের চিকিত্সার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।তাঁদের ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়েছে। রাজনাথ আরও বলেন, ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও খুবই দুঃখিত ও মর্মাহত। এই মামলার বিচারের জন্য সরকার বিশেষ আদালত গঠনের কথাও ভাবছে বলে জানান তিনি। কিন্তু বিরোধীরা রাজনাথের জবাবে সন্তুষ্ট হয়নি। কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস সদস্যরা ওয়াক-আউট করেন।

এদিন জিরো-আওয়ারে প্রসঙ্গটি উত্থাপণ করেন কংগ্রেসের কে সুরেশ। লোকসভার ওয়েলে নেমে তাঁরা ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে থাকেন।

ওই নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদে গুজরাতে দলিতদের বিক্ষোভের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কে সুরেশ অভিযোগ করেন, বিজেপি-শাসিত গুজরাতে জরুরী অবস্থার মতো পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। দলিতদের ওপর অত্যাচারের ঘটনার তিনি আরএএস ও উচ্চবর্ণের লবিকে দায়ী করেন। তাঁর এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেন ট্রেজারি বেঞ্চের সদস্যরা। কংগ্রেস সাংসদ সুরেশ আরও বলেন, রাজ্য সরকারের ওপর আস্থা না থাকায় অনেক দলিত আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, হিংসাই আরএসএস-এর অ্যাজেন্ডা। আরএসএস দলিত-মুক্ত ভারত গঠনের চেষ্টা করছে। বিজেপি ওই হামলায় মদত দিয়েছে।

রাজনাথ অভিযোগ খণ্ডন করে বলেন, ওই ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।সরকার কঠোর ভাষায় নিন্দা করছে। এরপর তিনি কংগ্রেসের প্রতি পাল্টা তোপ দেগে বলেন, গুজরাতে বিজেপি সরকার আসার আগে দলিতদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, দলিতদের প্রতি অপরাধ সামাজিক অপরাধ এবং তা সমূলে উত্খাত করতে সব দলগুলিকে একযোগে কাজ করতে হবে।