নয়াদিল্লি: প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তথা গুজরাত থেকে কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ আহমেদ পটেলের জীবনাবসান। বুধবার ভোররাতে তিনি গুরুগ্রামের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। সম্প্রতি, করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন আহমেদ। তারপর থেকেই তাঁর একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এদিন মাল্টি-অর্গান ফেলিওরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা।
একটি ট্যুইটের মাধ্যমে আহমেদ পুত্র ফৈজল জানান, গুজরাতের রাজ্যসভার সাংসদ ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ মারা গিয়েছেন। তিনি লেখেন, অত্যন্ত দুঃখ ও শোকের সঙ্গে আমি জানাচ্ছি, আমার বাবা আহমেদ পটেল প্রয়াত হয়েছেন। মাসখানেক আগে কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ার পর থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে এবং এদিন মাল্টি-অর্গান ফেলিওরের ফলে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
জাতীয় কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষের পদেও দায়িত্ব পালন করেছেন পটেল। ছিলেন সনিয়া গাঁধীর রাজনৈতিক সচিব। গত ১ অক্টোবর কোভিড-পজিটিভ হন তিনি। সেই সময় তাঁর সংস্পর্শে আসা সকলকে তিনি আইসোলেশনে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
গত ১৫ নভেম্বর তাঁকে গুরুগ্রামের মেদান্ত হাসপাতালের আইসিইউ-তে ভর্তি করা হয়। সেখানেই বুধবার তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, উপ রাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু ও গোটা গাঁধী পরিবার।
প্রধানমন্ত্রী লেখেন, আহমেদ পটেলজির প্রয়াণে শোকাহত। উনি বহুব বছর জনসেবা করেছেন। সমাজের সেবা করেছেন। প্রখর বুদ্ধির জন্য পরিচিত ছিলেন। কংগ্রেস পার্টিকে শক্তিশালী করতে তাঁর ভূমিকা সকলে মনে রাখবেন। ওনার ছেলে ফৈজলের সঙ্গে কথা হয়েছে। সমবেদনা জানিয়েছি। ওনার আত্মার শান্তি কামনা করি।
উপ-রাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু তাঁর শোকবার্তায় লেখেন, রাজ্যসভার সাংসদ আহমেদ পটেলের প্রয়াণে গভীর মর্মাহত। তিনি যোগ্য সাংসদ ছিলেন। রং নির্বিশেষে সকল রাজনৈতিক দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক ছিল। তাঁর পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা। ওনার আত্মার শান্তি কামনা করি।
শোকপ্রকাশ করেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। শোকবার্তায় তিনি বলেছেন, আহমেদ পটেলের মৃত্যুতে আমি এমন একজন সহকর্মীকে হারালাম যিনি নিজের জীবন কংগ্রেস দলকে উৎসর্গ করেছেন। তাঁর বিশ্বাসপরায়ণতা, কর্তব্যের প্রতি নিষ্ঠা, সর্বদা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া, তাঁর উদারতা-- ওনার এই বৈশিষ্ট্যের জন্যই সকলের থেকে তিনি আলাদা ছিলেন। আজ আমি একজন অপূরণীয় কমরেড, বিশ্বস্ত সহকর্মী ও প্রকৃত বন্ধুকে হারালাম। ওনার প্রয়াণে আমি শোকাহত। তাঁর পরিবারের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা। আমি তাঁদের সহমর্মিতা জানাচ্ছি।
রাহুল গাঁধী ট্যুইটারে লেখেন, আজ দুঃখের দিন। কংগ্রেস পার্টির স্তম্ভ ছিলেন আহমেদজি। দলের সবচেয়ে খারাপ দিনেও তিনি পাশে ছিলেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কংগ্রেসের জন্য বেঁচেছেন। দলের উনি বড় সম্পদ ছিলেন। আমরা ওনার অভাব অনুভব করব। ফৈজল ও তাঁর পরিবারকে আমার সমবেদনা ও ভালবাসা।
শোকজ্ঞাপন করেছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বডরাও। তিনি লেখেন, উনি যে শুধুমাত্র বুদ্ধিমান ও অভিজ্ঞ সহকর্মী ছিলেন তাই নয়, উনি এক প্রকৃত বন্ধুও ছিলেন। ওনার কাছে সর্বদা পরামর্শ ও আলোচনা করতাম। তিনি প্রচন্ড অবিচল, অনুগত এবং শেষের জন্য নির্ভরযোগ্য ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে বড় শূন্যতা তৈরি হল। ওনার আত্মার শান্তি কামনা করি।
শোকবার্তা পাঠিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। তিনি ট্যুইটারে লেখেন, আহমেদ পটেলের প্রয়াণে শোকাহত। তিনি ভীষণই ধীরস্থির ও অমায়িক মানুষ ছিলেন। তাঁর পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা।