নয়াদিল্লি: কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলির সমর্থনে সর্বসম্মতিক্রমে রাজ্যসভায় পাস হয়ে গেল কেন্দ্রের ‘বহু-প্রতিক্ষিত’ পণ্য পরিষেবা কর (গুডস অ্যান্ড সার্ভিস ট্যাক্স) বিল। বিষয়টিকে ‘ঐতিহাসিক’ উল্লেখ করে এই প্রেক্ষিতে সব দলকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।


বৃহস্পতিবার, সংবিধান বিল, ২০১৪ (১২২তম সংশোধনী)-কে সংসদের উচ্চকক্ষ অনুমোদন করে। এদিন সাত-ঘ্ণ্টা ধরে বিতর্কের পর ভোটাভুটি হয়। বিলের পক্ষে ভোট পড়েছে ২০৩টি। বিরুদ্ধে একটিও ভোট পড়েনি।

বিষয়টিকে কেন্দ্রের ‘নৈতিক জয়’ হিসেবেই উল্লেখ করেছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, দীর্ঘদিন ধরেই এই বিলের বিরোধিতা করে আসছে কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলি। যার ফলস্বরূপ, প্রায় ২ বছর ধরে আটকে ছিল জিএসটি।

শেষে বিরোধীদের সঙ্গে আলাদা-আলাদা করে বৈঠক করে তাদের সমর্থন আদায় করতে সমর্থ হয় বিজেপি।

এমনকী, কংগ্রেসের দাবি মেনে বিলে সংশোধনী আনে মোদী সরকার। সেই অনুযায়ী, ১ শতাংশ উৎপাদন কর বাতিল করা হয়।

পাশাপাশি, রাজ্যগুলির যে আর্থিক ক্ষতি হবে তা পাঁচ বছরের জন্য পূরণ করার মতো বিষয়গুলিকে আরও পরিষ্কার করে উল্লেখ করা হয় সংশোধীত বিলে।

এরপরই বিলে সমর্থন দিতে সম্মত হয় কংগ্রেস সহ প্রায় সব বিরোধী দল। যে ফলাফল এদিন রাজ্যসভার ভোটাভুটিতে প্রতিফলিত হয়েছে।

কারণ, রাজ্যসভায় এখনও সংখ্যালঘু শাসক দল। তাই রাজ্যসভায় বিল পাস করানোটা সরকারের কাছে চ্যালেঞ্জ ছিল।

এদিন তাতে চূড়ান্ত সফল মোদী সরকার। সেই দিক দিয়ে এদিনটি শাসক দলের পক্ষে ‘ঐতিহাসিক’ বটে।

এদিন বিলে মোট ৬টি সংশোধনী এনেছিল শাসক শিবির। তার মধ্যে ছিল ১ শতাংশ অতিরিক্ত কর মকুব। প্রত্যেকটিই পাস হয়েছে।

এর আগে লোকসভাতে বিলটি পাস হয়েছিল। এবার সংশোধিত বিলটি পুনরায় লোকসভায় ফের পেশ করা হবে।

সেখানে পাস হলে বিলটিকে সব রাজ্যের বিধানসভায় অন্তত ৫০ শতাংশ ভোট পেতে হবে। তা একবার হয়ে গেলেই বিল কার্যকর হবে।

এদিন বিলের পাস হওয়াকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে সব দলকেই ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। মোদী বলেন, সহযোগিতাপূর্ণ যুক্তরাষ্ট্রবাদের নিদর্শন হয়ে থাকবে জিএসটি। একসঙ্গে আমরা ভারতকে উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাব।

তবে, এখনও কেন্দ্রের সামনে একমাত্র বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে তামিলনাড়ু। কারণ, তারা এখনও বিলের বিরোধিতা করেছে।

এদিনও তামিলনাড়ুর শাসক দল জয়ললিতার এডিএমকে-র সাংসদরা ভোটাভুটির আগে ওয়াকআউট করে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জিএসটি-র ফলে বর্তমানে প্রচলিত যাবতীয় পরোক্ষ কর—যেমন কেন্দ্রীয় আবগারি/শুল্ক, রাজ্য ভ্যাট/বিক্রয় করের আর কোনও অস্তিত্ব থাকবে না। তার জায়গায় দেশজুড়ে একটাই কর চালু হবে।