কে এই জাকির নায়েক?
পেশায় জাকির নায়েক একজন ডাক্তার। ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট তিনি। পিস টিভি চ্যানেলের মালিকও তিনি।
তুলনামূলক ধর্ম বিষয়ের সুপন্ডিত জাকির। যদিও কোনও কোনও মহলে তাঁকে ‘মৌলবাদী টেলিভিশন প্রচারক’ও বলা হয়।
তার পুরো নাম জাকির আব্দুল করিম নায়েক। ১৯৬৫-র ১৮ অক্টোবর মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে তাঁর জন্ম। বর্তমানে স্ত্রী ফাহাতের সঙ্গে তিনি দুবাইতে থাকেন। ফাহাতের বাড়ি পুনেতে। তাঁদের এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। দুই সন্তানই বাবার পদাঙ্ক অনুসরন করে ইসলামি প্রচারক হয়েছেন।
মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিকিত্সাবিদ্যার স্নাতক হন তিনি।
একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে জাকির বলেছেন, ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া শব্দবন্ধটি ‘অ-ইসলামিক’। ঢাকা হামলার চক্রীদের সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন, তাঁর অনুগামীদের ৯০ শতাংশই বাংলাদেশের। অন্যরা তাঁর জন্যই ইসলামের কাছাকাছি এসেছেন।
৫১ বছরের এই চরমপন্থী প্রচারক একবার বলেছিলেন, ‘প্রত্যেক মুসলিমেরই সন্ত্রাসবাদী হওয়া উচিত’। ব্রিটেন, কানাডা সহ বেশ কয়েকটি দেশ তাঁর প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
জাকির নায়েকের উস্কানিমূলক বক্তব্য একটি ওয়েবসাইটে তোলা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘একজন ডাকাত পুলিশকে দেখলে ত্রস্ত হয়ে ওঠে। তাই একজন ডাকাতের কাছে পুলিশ সন্ত্রাসবাদী। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রত্যেক মুসলিমকে ওই ডাকাতের কাছে সন্ত্রাসবাদী হয়ে উঠতে হবে’।
জাকির নায়েককে আরও বলতে শোনা গিয়েছে, ‘এমন অনেক ইহুদি রয়েছেন যাঁরা মুসলিমদের পক্ষে ভালো। কিন্তু সামগ্রিকভাবে.... কোরান আমাদের বলেছে, সামগ্রিকভাবে তারা আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু’।
২০০৬-এর ওই ওয়েবসাইট পোস্টে জাকির বলেছেন, ওসামা বিন লাদেন যদি ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করেন, তাহলে আমি তাঁর সঙ্গে আছি। আমি জানি না, তিনি কী করছেন। আমার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ নেই। আমি তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে জানি না। আমি সংবাদপত্র পড়ি।
শুধু ঢাকার হামলাকারীরাই নয়, জাকিরের বিতর্কিত ভাষণ জঙ্গি সংগঠন আইএসের হায়দরাবাদ মডিউলের নেতা ইব্রাহিম ইয়াজদানিকেও সন্ত্রাসের পথে আসতে উদ্ধুদ্ধ করেছে বলে অভিযোগ। এনআইএ জেরার করার সময় ইব্রাহিম এ কথা বলেছে বলে জানা গেছে।
২০১৩-তে মালয়েশিয়া সরকারের তোকোহ মাল হিজরাহ পুরস্তার পান জাকির। এর আগে দেবদেবী ও নিরামিশ ভোজনের প্রথা সম্পর্কে অপমানজনক মন্তব্য করে জাকির হিন্দুদের ক্ষুব্ধ করে তুলেছিলেন বলে অভিযোগ।
২০১৩-তে দুবাইয়ের ১৭ তম আন্তর্জাতিক পবিত্র কোরান পুরস্কারের মাধ্যমে বর্ষসেরা ইসলামিক ব্যক্তিত্ব হন তিনি।
তাঁর কয়েকটি বিতর্কিত মন্তব্য
- ‘সমকামীদের মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে’।
- ‘৯/১১-র হামলা জর্জ বুশের কাজ’।
- ‘যে মুসলিম ইসলামের পথ ত্যাগ করবে তাকে নিধন করতে হবে’।
- ‘ইসলামই হল একমাত্র ধর্ম যা সমগ্র মানবতার ক্ষেত্রে শান্তি আনতে পারে’।
- ‘ক্রীতদাসীদের সঙ্গে মুসলিমদের যৌনসম্পর্ক করার ক্ষেত্রে কোরানের অনুমতি রয়েছে’।