গ্রীষ্মের সময় এ ধরনের ফসলের চাহিদা খুব বেশি থাকে। কিন্তু লকডাউন জনতি কারণে সরবরাহ সংক্রান্ত ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে। তাই কৃষকরা ফসল বাজারে নিয়ে যেতে পারছেন না।
আচমকা চাহিদা কমে যাওয়ায় ভারতে লক্ষ লক্ষ কৃষক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। তাঁদেরই একজন মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার অনিল সালুনখে। তাঁর দুই একর জমিতে চাষ করা স্ট্রবেরি গৃহপালিত গরুর মুখে তুলে দিতে দিতে সংবাদসংস্থাকে তিনি বলেছেন, পর্যটক ও আইসক্রিম প্রস্তুতকারীদের কাছে স্ট্রবেরির ভালো চাহিদা থাকে। এবার তো কোনও পর্যটকই নেই।
এবার ফসল বিক্রি করে ৮ লক্ষ টাকা আয় হবে ভেবেছিলেন অনিল। কিন্তু সেই আশায় ছাই ফেলে দিয়েছে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। লকডাউনের ফলে তিনি তাঁর চাষের খরচটুকুও তুলতে পারেননি। কারণ, বড় শহরগুলিতে ফসল পাঠানো যাচ্ছে না। দুই একর জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করতে তাঁর খরচ হয়েছিল আড়াই লক্ষ টাকার মতো।
দেশের আইটি হাব বলে পরিচিত বেঙ্গালুরু সংলগ্ন মুনিশামাপ্পার এক কৃষক বিক্রি করতে না পারায় তাঁর ক্ষেতের প্রায় ১৫ টন আঙুর পাশের জঙ্গলে ফেলে দিয়ে এসেছেন। এই ফসল চাষ করতে তাঁর খরচ হয়েছিল ৫০ হাজার টাকা।
তিনি গ্রামের লোকজনদের আঙুর নিয়ে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু হাতেগোনা কয়েকজনই এসে আঙুর নিয়ে গিয়েছে।
ভারতের আঙুর ইউরোপেও রফতানি হয়। কিন্তু সেখানেও ভাইরাসের দাপট। ফলে ইউরোপে আঙুর ক্রয় কমে গিয়েছে। দেশের বৃহত্তম আঙুর রফতানিকারক সংস্থা সহ্যাদ্রি ফার্মসের দ্যানেশ আগলে এ কথা জানিয়েছেন।
এছাড়াও মাঠ থেকে আর বাজারের মুখ দেখতে পারছে না বিভিন্ন মহার্ঘ ফুলও। বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য ফুলের চাহিদা থাকে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে বিয়ে বাতিল হয়ে যাওয়ায় চাহিদা নেই ফুলেরও।
এক কৃষক রাহুল পাওয়ার বলেছেন, গ্রীষ্মে তাঁর ক্ষেতের এক-একটি ফুলই ১৫-২০ টাকায় বিক্রি হয়। এখন তো কেউ এক টাকাতেও কেউ কিনছে না।
আর এক কৃষক সচিন শেলার। তিনি জাানিয়েছেন, তিনি যে ফুল চাষ করেছেন, তার বেশিরভাগই বিক্রি হত গ্রীষ্মে। কিন্তু এই চাহিদার সময়ই বিক্রি বন্ধ হয়ে গিয়েছে।