নয়াদিল্লি: রাজ্যসভার লড়াইয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে সিপিএম ছাড়পত্র দিল না। এদিকে,  রাজ্যসভায় প্রার্থীপদ মাস্ট্রার স্ট্রোক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! দিল্লিতে গতকাল জানালেন, রাজ্যসভায় মীরা কুমারকে কংগ্রেস প্রার্থী করলে সমর্থন করবে তৃণমূল।


রাজ্যসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের পাঁচটি আসনে তৃণমূল আগেই প্রার্থী দিয়েছে। ষষ্ঠ আসনের প্রশ্নেও অবস্থান স্পষ্ট করলেন তৃণমূলনেত্রী। যদিও দ্বিধা-দ্বন্দ্ব এখনও পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারল না সিপিএম। মঙ্গলবার দিল্লিতে বৈঠকে বসে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি। সূত্রের খবর, কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে সীতারাম ইয়েচুরিকে তৃতীয় বার রাজ্যসভায় পাঠানোর প্রশ্নে ভোটাভুটি হয়। কিন্তু ৫০-৩০ ব্যবধানে, কংগ্রেসের সমর্থনের পক্ষের অংশ হেরে যায়। তাৎপর্যপূর্ণভাবে কংগ্রেসের সমর্থনে ইয়েচুরির রাজ্যসভায় যাওয়ার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন বাংলারই কয়েকজন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য!

সীতারামকে আটকালেও, পরবর্তী রণকৌশল চূড়ান্ত করতে পারেনি এ কে গোপালন ভবন।

এই পরিস্থিতিতে কৌশলী অবস্থান নিয়ে মমতা এদিন জানিয়ে দিয়েছেন, কংগ্রেস মীরা কুমারকে প্রার্থী করলে, সমর্থন দেবে তৃণমূল। যদিও, এতদিন শুধু সীতারামের নামে সিপিএমের ছাড়পত্রেরই অপেক্ষায় ছিল কংগ্রেস।

সোমবার দিল্লিতে অধীর চৌধুরী ও আব্দুল মান্নানের সঙ্গে বৈঠক করেন রাহুল গাঁধী। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে সীতারামের বিকল্প প্রার্থী হিসেবে মীরা কুমারের নাম নিয়ে আলোচনা হয়।

আর এর পরদিনই মীরাকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করলেন তৃণমূলনেত্রী!

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, এটা করে ‘এক ঢিলে তিন পাখি’ মারলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রথমত, এতে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডকে আরও কাছে টানার বার্তা দিলেন তৃণমূলনেত্রী।

কারণ, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে লড়েও হেরে গিয়েছেন বিরোধীদের প্রার্থী মীরা কুমার। তাই তাঁকে সমর্থন করে, যদি বাংলা থেকে ৬ বছরের জন্য রাজ্যসভায় পাঠানো যায়, তাহলে সনিয়া গাঁধীকে বন্ধুত্বের বার্তা দেওয়া যাবে।

পর্যবেক্ষকদের একাংশ এও বলছেন, মীরা কুমারকে মমতার সমর্থনের ঘোষণা কংগ্রেস-সিপিএমের দূরত্ব তৈরিতে অনুঘটকের মতো কাজ করতে পারে। কারণ, মমতার বার্তার পর, কংগ্রেস যদি মীরা কুমারকেই প্রার্থী করে, তাহলে আরও বেকায়দায় পড়বে সিপিএম।

সেক্ষেত্রে তারা যদি মীরা কুমারের বিরুদ্ধে ভোট দেয় কিম্বা গরহাজির থাকে, তাহলে প্রশ্ন উঠবে, দু’দিন আগে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে, এই মীরা কুমারকেই তো ভোট দিয়েছিল তারা! তাহলে রাজ্যসভার ভোটে কেন উলটপুরাণ?

এই পরিস্থিতিতে কী করবে সিপিএম?

সূত্রের খবর, রাজ্যসভার ষষ্ঠ আসনে প্রার্থী দেওয়া হবে নাকি, অন্য কাউকে সমর্থন করা হবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্তের ভার রাজ্য বামফ্রন্টের ওপর ছেড়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি।