নয়াদিল্লি: সাংসদ-বিধায়ক সহ দেশের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বিশেষ আদালত গঠনে রাজি তারা। সুপ্রিম কোর্টে এমনটাই জানাল কেন্দ্র।


২০১৪ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১,৫৮১ জন সাংসদ ও বিধায়কের বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার মামলা ঝুলছিল। তিন বছর পর, সেই সংখ্যা স্রেফ বৃদ্ধিই পেয়েছে।


এখন, বিশেষ আদালত গঠন করতে কেন্দ্র সম্মত হওয়ায় অযথা বিলম্বের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। কারণ, এবার দ্রুত এই মামলাগুলির নিষ্পত্তি হবে বলেই আশা।


এদিন সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্র জানিয়েছে, তারা দেশে এধরনের ১২টি আদালত গড়তে রাজি। এর জন্য ইতিমধ্যেই ৭.৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।


দেশজুড়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ঠিক কত মামলা বকেয়া রয়েছে, সেই সংক্রান্ত তথ্য জোগাড় করতে কিছু চেয়ে এদিন শীর্ষ আদালতে আবেদন করে কেন্দ্র। যাতে নির্ধারণ করা যায়, ঠিক কটা আদালত গঠন করা প্রয়োজন।


প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল দ্রুত বিশেষ আদালত গঠন করে এধরনের মামলার নিষ্পত্তি করতে। কিন্তু কোনও অগ্রগতি না হওয়ায়, গতমাসে ফের একবার কেন্দ্রকে স্মরণ করিয়ে সর্বোচ্চ আদালত বলে, আগামী এক বছরের মধ্যে বিশেষ আদালত গঠন করতে।


বিশেষ আদালত গঠনের ওপর জোর দিয়ে বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ও বিচারপতি নবীন সিনহার বেঞ্চ জানায়, শীর্ষ আদালতের অধীনস্থ দেশের প্রায় ১৭ হাজার আদালতে গড়ে বছরে ৪,২০০ মামলার শুনানি হয়।


আর গতমাসেই, কাকতালীয়ভাবে, নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দেয়, দোষী সাব্যস্ত সাংসদ ও বিধায়করা আর কোনওদিন ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না। রাজনীতিকে অপরাধমুক্ত করতে একটি আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন বলেও সুপ্রিম কোর্টে জানায় কমিশন।


এর আগের শুনানিতে অবশ্য সুপ্রিম কোর্টে সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয় কমিশনকে। বেঞ্চের প্রশ্ন, কীকরে কমিশন এই বিষয়ে চুপ থাকতে পারে? তবে, কমিশন জানায়, তারা ইতিমধ্যে কেন্দ্রকে সুপারিশ করেছে বর্তমান আইনে সংশোধনী আনতে।


কমিশন জানায়, বর্তমান আইন মোতাবেক, একজন দোষী সাব্যস্ত জনপ্রতিনিধি সাজা শেষ হওয়ার ৬ বছর পর্যন্ত কোনও নির্বাচনে লড়তে পারবেন না। কমিশন এই নিষেধাজ্ঞাকে বাড়িয়ে  আজীবন করার সুপারিশ করে।


এদিন এই প্রশ্নের উত্তরে বেঞ্চকে কেন্দ্র জানায়, নির্বাচন কমিশন ও আইন কমিশনের করা সুপারিশগুলি বিবেচনাধীন। এখনও এই প্রেক্ষিতে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। যদিও, কেন্দ্রের কৌঁসুলি অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এ-ও জানান, বিশেষ আদালত গঠনের বিষয়টি রাজ্যগুলির দায়িত্ব।