নয়াদিল্লি: দাম্পত্য ধর্ষণকে ফৌজদারি অপরাধ বলা যাবে না। দিল্লি হাইকোর্টে বলল কেন্দ্র। কেন্দ্রের বক্তব্য, দাম্পত্যে ধর্ষণকে ফৌজদারি অপরাধের তকমা দেওয়া হলে এমন এক প্রবণতা মাথাচাড়া দিতে পারে, যা বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠানটিকেই ধ্বংস করে দেবে, দাম্পত্য ধর্ষণ স্বামীদের হেনস্থার সহজ হাতিয়ারে পরিণত হবে।

দাম্পত্য ধর্ষণকে ফৌজদারি অপরাধের স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে যেসব পিটিশন পেশ হয়েছে, সে ব্যাপারে কেন্দ্র হলফনামা দিয়ে এও বলেছে, সুপ্রিম কোর্ট ও বিভিন্ন হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮ এ ধারার (স্ত্রীর ওপর স্বামী, শ্বশুরবাড়ির নির্যাতন) ক্রমবর্ধমান অপব্যবহারের বিষয়টি উল্লেখ করেছে।

এদিন অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি গীতা মিত্তল ও বিচারপতি সি হরিশঙ্করকে নিয়ে গঠিত দিল্লি হাইকোর্টের বেঞ্চে পেশ করা কেন্দ্রের জবাবে দাম্পত্য ধর্ষণের ব্যাপারে রাজ্য সরকারগুলির মতামতও জানতে বলা হয়েছে যাতে পরবর্তীকালে কোনও জটিলতা তৈরি না হয়।

কেন্দ্রের কৌঁসুলি মনিকা অরোরা হলফনামাটি বেঞ্চে পেশ করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, দাম্পত্য ধর্ষণ যাতে এমন প্রবণতা না হয়ে ওঠে যে বিয়ে ব্যাপারটাই বিপন্ন হয়ে পড়বে, স্বামীদের হেনস্থা করা হবে, তা যথেষ্ট সুনিশ্চিত করা উচিত।

ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় (ধর্ষণ) স্বামীদের হাতে যৌন নির্যাতনের শিকার বিবাহিত মহিলাদের প্রতি বৈষম্য করা হয় বলে সওয়াল করে ধারাটি অসাংবিধানিক ঘোষণার দাবিতে একগুচ্ছ পিটিশন পেশ হয়েছে।

আবেদনকারীদের একজনের হয়ে আইনজীবী কলিন গনসালভেস যুক্তি দেন, বিয়ে স্বামীকে এমন অধিকার দেয়নি যে, তিনি চাহিদামতো স্ত্রীকে যৌন সংসর্গ করতে বাধ্য করতে পারেন। বিয়ে কোনও লাইসেন্স নয়, যার জোরে তিনি ইচ্ছা হলেই স্ত্রীকে জোর করে ধর্ষণ করতে পারেন, একটি অবিবাহিত মেয়ের নিজের শরীরের ওপর যে অধিকার আছে, একজন বিবাহিত মহিলারও তা আছে। এ প্রসঙ্গে বিদেশের বিভিন্ন আদালতের রায়েরও উল্লেখ করেন তিনি।

কেন্দ্রের পক্ষে বলা হয়, ৩৭৫ ধারায় যেমন ধর্ষণের সংজ্ঞা রয়েছে, কিন্তু দেশের কোনও আইন বা বিধিতে দাম্পত্য ধর্ষণের সংজ্ঞা দেওয়া হয়নি। সুতরাং এ নিয়ে সমাজে ব্যাপক ঐকমত্য হওয়া চাই।