নয়াদিল্লি: পেটে এসে বিঁধছে একের পর এক গুলি। গ্রেনেড বিস্ফোরণে ভেঙে গিয়েছে দুই হাত। শত্রুর গুলিতে ফুঁড়ে গিয়েছে ডান চোখ। তবুও লড়াই ছাড়েননি চেতন চিতা। সেই অবস্থাতেই গুলি চালিয়ে খতম করে দিয়েছেন দুর্দান্ত লস্কর ই তৈবা পান্ডা আবু মুসাইবকে।


সিআরপিএফ কম্যান্ডার চেতন চিতার কাহিনী এখন ঘুরছে জওয়ানদের মুখে মুখে। সেনা প্রধান বিপিন রাওয়াত গতকাল নয়াদিল্লির এইমস ট্রমা সেন্টারে গিয়ে তাঁকে দেখে এসেছেন। এক আধটা নয়, ১৬টা গুলি খেয়েছেন এই রাজপুত বীর। শত্রুর সঙ্গে যেমন লড়েছেন, এখন সেভাবেই পাঞ্জা লড়ছেন মৃত্যুর সঙ্গে।

ঙ্গলবার কাশ্মীরের বান্দিপোরায় জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষে মারাত্মক জখম হন সিআরপিএপ ৪৫ ব্যাটেলিয়নের এই কম্যান্ডার। শ্রীনগরের সেনা হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা সম্ভব হয়নি। হেলিকপ্টারে করে নিয়ে আসা হয়েছে এইমস ট্রমা সেন্টারে।

সিআরপি জানিয়েছে, বান্দিপোরার গ্রামে দুই জঙ্গির লুকিয়ে থাকার খবর পেয়ে বিন্দুমাত্র অপেক্ষা না করে তৎক্ষণাৎ সেনার সঙ্গে রওনা দেন এই কম্যান্ডার। সকলের নজর এড়িয়ে জঙ্গিদের একেবারে কাছাকাছি চলে আসেন তিনি। প্রচুর অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদে সজ্জিত জঙ্গিদের সঙ্গে শুরু হয় তাঁর মুখোমুখি লড়াই। প্রচণ্ড জখম অবস্থাতেও ১৬ রাউন্ড গুলি চালান চেতন চিতা। সংঘর্ষে ১ মেজর সহ ৩ সেনা কর্মী শহিদ হন, আহত হন ৭জন। তাঁরই হাতে মারা পড়ে লস্করের ওই প্রথম সারির জঙ্গি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, দেশের সেরা চিকিৎসকরা চিতাকে সারানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাঁর অবস্থা এখনও যথেষ্ট জটিল। জানা গিয়েছে, তিনি অ্যাসিডোসিসে ভুগছেন, তাঁর রক্তে ও অন্যান্য অংশে অ্যাসিড মারাত্মক বেড়ে গিয়েছে। ৪৫ বছরের চিতা রাজস্থানের কোটার বাসিন্দা। তাঁর সম্পূর্ণ বিপন্মুক্তি চেয়ে প্রার্থনা করছে তাঁর শহর।

সেনা জানিয়েছে, জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষ চলার সময় এক দল বিক্ষোভকারী ঘটনাস্থলে এসে সেনাকর্মীদের দিকে ক্রমাগত পাথর ছুঁড়তে থাকায় অপারেশন রীতিমত ব্যাহত হয়। এমনকী আহত সেনা কর্মীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় সেই গাড়িতেও ছোঁড়া হয় পাথর। এরপরেই সেনা প্রধান জানিয়ে দেন, সেনা অপারেশনের সময় যদি কেউ ঘটনাস্থলে এসে সেনার কাজে বাধাদানের চেষ্টা করে, তবে তাকেও জঙ্গিদের সহযোগী বলে গণ্য করা হবে।