কটক:  কন্যাভ্রুণ হত্যা, মেয়ে হওয়ার জন্যে বেধড়ক মার, অকথ্য অত্যাচার, এর বোধহয় কোনও শেষ নেই। যদিও কেন্দ্রীয় সরকার বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও প্রকল্প সহ অন্যান্য আরও নানা কর্মসূচি আনছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের মনে কন্যা সন্তানদের প্রতি যেমন ভাবনা ছিল, তেমনই থেকে গিয়েছে, কিছু বদল আসেনি। ওড়িশ্যার কটকে চার বছরের এক শিশুকন্যাকে তার পিসি ঝাঁটাপেটা সহ বেধড়ক মারধর করে প্রতিদিনই। সম্প্রতি বাড়ির ছাদে বাচ্চাটিকে মারছিল পিসি। এমন সময় কোনও এক প্রতিবেশী ছবিটি তুলে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ঘটনার ভিডিও ছেড়ে দেন। ভাইরাল হয়ে যায় নৃশংস মারের সেই ভিডিও। প্রণতি রাউল নামের ৩৮ বছর বয়সি ওই মহিলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

জানা গিয়েছে, মেয়েটি থাকে কটকের সিডিএ সেক্টর-১১এ। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে খালি গায়ে ওই চার বছরের মেয়েটি জামা কাপড় কাচছে। কিন্তু আচমকা ওই মহিলা এসে প্রথমে খালি হাতে, পরে ঝাঁটাপেটা শুরু করে বাচ্চাটিকে। কটকের চাইল্ড হেল্প লাইন সদস্য ডলি দাস জানিয়েছেন, তাঁকে ঘটনা সম্পর্কে জানান কোনও এক প্রতিবেশী। এরপরই গ্রেফতার করা হয় ওই মহিলাকে।

প্রসঙ্গত, মেয়েটিকে তার বাবা-মা, পিসির কাছে রেখে ভাইকে নিয়ে গত ন মাস আগে দিল্লি চলে গিয়েছে কাজ করতে।এখন প্রতিদিনই মেয়েটির ওপর চলে এরকম মারধর। শিশুকন্যাটির সারা দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বাচ্চাটি জানিয়েছে, যখনই সে ঠিকভাবে বাসন ধুতে পারে না, বা কাপড় পরিস্কার করে না, তখনই চলে এরকম মার। মেয়েটি আরও জানিয়েছে, মা-বাবা তাকে পিসির চেয়েও বেশি মারত, তাই সে পিসির কাছেই থেকে যাওয়াটা সঠিক মনে করে। প্রসঙ্গত, এখানে শুধু শিশুর ওপর অত্যাচার নয়, লিঙ্গ বৈষম্যের মতো বিষয়ও রয়েছে।

এদিকে ওই অভিযুক্ত মহিলার দাবি, মেয়েটা সারাক্ষণই কিছু না কিছু উল্টোপাল্টা করে, তাই তাকে মারতে হয়। এই মার সম্পর্কে পুরোটাই জানে মেয়েটির বাবা-মা, দাবি অভিযুক্ত মহিলার।

আপাতত মেয়েটিকে প্রাথমিক পরীক্ষার জন্যে  শিশুভবনে পাঠানো হয়েছে।মেয়েটির বাবা-মাকে এসে তাকে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। তারা মাস দুয়েকের মধ্যেই আসবে বলে জানিয়েছে, দাবি ডলি দাসের, যিনি মেয়েটিকে উদ্ধার করেছেন।

অভিযুক্ত মহিলার বিরুদ্ধে মামলা শুরু করেছে পুলিশ।